নরেন্দ্র মোদী।
লোকসভা ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বছরে ২ কোটি কাজের। সরকারের সাড়ে তিন বছরের মাথায় দিলেন পকোড়া বেচে ২০০ টাকা রোজগারের মডেল। আর এই অস্বস্তির মধ্যেই সব হাতে রোজগারের সময়সীমাটিও দিব্যি পিছিয়ে দিলেন আরও ৪ বছর।
উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঝুলি থেকে বেরিয়েছিল একটি নতুন শব্দগুচ্ছ- ‘নতুন ভারত’। তবে সেই স্বপ্নের ‘নতুন ভারত’ তাঁর সরকারের চলতি মেয়াদে আসবে না। আসবে ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে।
গত কয়েক মাস ধরেই মোদী প্রচার করেছেন, ২০২২ সালের মধ্যে কী কী করবেন তিনি। রীতিমতো বিজ্ঞাপন দিয়ে ফলাও করে প্রচার হয়েছে সেই আধ ডজন ‘সঙ্কল্প’। ২০২২ সালে তিনি ভারতকে মুক্ত করতে চান দারিদ্র, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, জাতিবাদ আর আবর্জনা থেকে। এ বারে নিজেই সেই তালিকায় জুড়লেন ‘বেকারি’ও।
শ্রীদেবী-র মৃত্যু নিয়ে গোটা দেশ যখন শোকস্তব্ধ, সেই সময়ে গত কাল গুজরাতের সুরাতে ‘নতুন ভারতের জন্য দৌড়’-এর সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই ‘নতুন ভারত’-এর স্বপ্নে মোদী যোগ করেন রোজগার প্রসঙ্গটিও। তবে তার দায়ও তিনি ঠেলে দিয়েছেন সাধারণ মানুষের কাঁধে। বাকি ছ’টি বিষয় বলে সব শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘নতুন ভারতে সকলে কাজের সুযোগ পাক। আর সাধারণ মানুষ যদি মনে
করেন, এ কাজটি করতে হবে, তা হলে সেটা হবেই।’’
আরও পড়ুন: আমি থাকলে ইস্তফা দিতাম: চিদম্বরম
রাহুল গাঁধীরা বেকারি নিয়ে নিরন্তর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে আসছেন প্রধানমন্ত্রীকে। মোদীর সেনাপতি অমিত শাহ রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই কবুল করেছেন, ‘‘দেশে বেকার সমস্যা আছে, অস্বীকার করি না। আমরা এর সমাধান খুঁজছি।’’ কিন্তু গত লোকসভা ভোটের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যে সমস্যার সমাধান পাঁচ বছর মেয়াদের মধ্যেই করার কথা ছিল, সেটিরও গোলপোস্ট পিছিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিজেপি অবশ্য বলছে, প্রধানমন্ত্রী গোলপোস্ট পেছোননি। চলতি সরকার যথেষ্ট রোজগারের সুযোগ করেছে। কিন্তু অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজের হিসেব রাখা হয় না বলেই পরিসংখ্যান তুলে জবাব দেওয়া যায় না। আর বিরোধীদের মত— নোটবন্দি আর জিএসটি-র মতো খামখেয়ালি পদক্ষেপে দেশে যেটুকু রোজগারের সুযোগ ছিল, প্রধানমন্ত্রী তা-ও নষ্ট করে ছেড়েছেন। এখন তাই পকোড়া ভেজে রোজগারের পরামর্শ দিয়ে হচ্ছে তাঁকে। চিদম্বরম যার পরিপ্রেক্ষিতে বলেছেন, সরকারের যুক্তিতে ভিক্ষাও তো তা হলে রোজগার!