গবেষণাতেও ‘সরকারি ফাঁস’, উঠছে প্রতিবাদ

গবেষণার বিষয়বস্তু হতে হবে জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তবেই গবেষণার অনুমতি পাবেন পিএইচডি পড়ুয়ারা। না হলে খারিড হবে আবেদন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৯ ০৫:৫৬
Share:

গবেষণার বিষয়বস্তু হতে হবে জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তবেই গবেষণার অনুমতি পাবেন পিএইচডি পড়ুয়ারা। না হলে খারিড হবে আবেদন। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য এ রকমই একটি নির্দেশিকা জারি করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। যে সিদ্ধান্তকে আসলে শিক্ষা ক্ষেত্রে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ হিসাবেই দেখছেন শিক্ষক ও ছাত্র সংগঠনগুলির বড় অংশ।

Advertisement

দেশে গবেষণার মানোন্নয়নে গত ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা বৈঠকে বসেন। দেশে হওয়া বিভিন্ন গবেষণার মান নিয়ে বৈঠকে প্রশ্ন ওঠে। সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে ঠিক হয় ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যে বিষয়গুলি নিয়ে গবেষণা হবে, তার সঙ্গে জাতীয় স্বার্থের সরাসরি সম্পর্ক থাকতে হবে।

কেন্দ্রের ওই নির্দেশের ভিত্তিতে গত ১৩ মার্চ এ নিয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত বিভাগীয় প্রধানের উদ্দেশে বলা হয়েছে, অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে গবেষণায় পড়ুয়াদের নিরুৎসাহ করতে হবে। তবে জাতীয় স্বার্থ বলতে ঠিক কী, নির্দেশিকায় স্পষ্ট করেনি কেন্দ্র। তবে এসএফআইয়ের জেনারেল সেক্রেটারি ময়ূখ বিশ্বাসের দাবি, ‘‘আসলে দলিত ও নারীদের সমস্যা, মৌলিক বিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলি সরকারের কোপে পড়তে চলেছে। বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘উইমেন স্টাডিজ’-র

Advertisement

মতো বিভাগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এদের কাছে ইতিহাস অপ্রাসঙ্গিক। কিন্তু পুরাণ প্রাসঙ্গিক।’’ ময়ূখের দাবি, মনুবাদী সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী বিজেপি সরকার এই সব প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে গবেষণা চায় না।

ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে নিজেদের আপত্তি জানিয়েছে কেরল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন। তাঁদের বক্তব্য, কোন পড়ুয়া কী নিয়ে গবেষণা করবে, সেটি তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। উপর থেকে কিছু চাপিয়ে দেওয়ার অর্থ সরকারের হস্তক্ষেপ। ভোটের পরে আন্দোলনে নামার কথা ভাবছে এসএফআইও।

দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জয়তী ঘোষের মতে, ‘‘হাস্যকর সিদ্ধান্ত। এর ফলে সামাজিক অসাম্য, মহিলাদের অধিকার, দলিতদের ওপর বঞ্চনার মতো বিষয় নিয়ে গবেষণা করতে দেওয়া হবে না। এই সরকারের নীতিই হল, বিরুদ্ধ সমালোচনা চলবে না। করলে দেশদ্রোহী তকমা দেবে এরা।’’

কেরল কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় গত ১৩ মার্চ এক নির্দেশিকা জারি করে বিভাগীয় প্রধান ও ডিনদের উদ্দেশে বলেছে, জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ের একটি তালিকা তৈরি করতে। এই তালিকার বাইরে গবেষণা করা যাবে না। প্রতিবাদে সেখানকার ইংরেজি ও তুলনামূলক সাহিত্যের বোর্ড অব স্টাডিজ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অধ্যাপিকা মীনা টি পিল্লাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement