মোহন ভাগবত। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের নিশানা করার ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন আরএসএস নেতৃত্ব। এ বারে লোকসভা ভোটের ফল নিয়ে বিজেপির তীব্র সমালোচনা করলেন আরএসএস-এর অন্যতম শীর্ষ নেতা ইন্দ্রেশ কুমার। তাঁর কথায়, ‘‘রামকে ভক্তি করা সত্ত্বে যে দল অহংকারী হয়ে উঠেছিল, তাদের (বিজেপি) ২৪১ আসন পেয়েই থেমে যেতে হয়েছে।’’
গত দশ বছরে বিজেপির পিছনে সংখ্যার জোর থাকায় একদিকে আরএসএস যেমন বিভিন্ন বিষয়ে চেয়েও মুখ খুলতে পারেনি, তেমনই বিজেপি নেতাদের একাংশ সঙ্ঘকে সে ভাবে গুরুত্ব দেননি। লোকসভার ফলপ্রকাশের ক’দিন আগেই বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা এক সাক্ষাৎকারে সে কথা কার্যত স্বীকারও করেছিলেন। এ বারের ভোটে বিজেপি একক ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার পর থেকেই প্রকাশ্যে সরব হতে শুরু করেন সঙ্ঘ নেতৃত্ব। প্রথমে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত কারও নাম না করে বার্তা দেন, প্রধান সেবককে নম্র হতে হবে। ওই বার্তা যে মোদীর উদ্দেশেই, তা নিয়ে নিঃসংশয় সব মহলই। নিজেদের মুখপত্র ‘অর্গানাইজ়ার’এ দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের এনডিএ জোটে অন্তর্ভুক্তির সমালোচনা করে সরব হয় আরএসএস। এ বার বিজেপি নেতাদের ঔদ্ধত্যের সমালোচনা করে সরব হলেন আরএসএসের আর এক শীর্ষ নেতা ইন্দ্রেশ কুমার। বৃহস্পতিবার রাজস্থানে এক সভায় তিনি বলেন, ‘‘যারা রামের প্রতি ভক্তি দেখিয়েও পরে ধীরে ধীরে উদ্ধত হয়ে উঠেছিল, তারা ভোটে বড় দল হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ২৪১-এ থামতে হয়েছে তাদের।’’ বার্তা স্পষ্ট, এত দিন চুপ থাকলেও আগামী দিনে বিজেপির প্রতিটি পদক্ষেপের উপর যে সঙ্ঘ নেতৃত্বের নজর থাকবে, তা তৃতীয় সরকারের গোড়া থেকেই বুঝিয়ে দিতে চাইছেন সঙ্ঘ নেতারা।
ভোট মিটে যাওয়ার পরে সঙ্ঘের ওই সতর্কবাণীকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ কংগ্রেস। আজ দলের মুখপাত্র পবন খেড়া বলেন, ‘‘আরএসএসের কথা এখন আর কেউ গুরুত্ব দেয় না! প্রধানমন্ত্রী মোদী পর্যন্ত আরএসএসকে গুরুত্ব দেন না। আমরা কেন দেব!’’
অনেকে মনে করছেন, বিজেপি এবং সঙ্ঘের মধ্যে বিরোধ এখনই মিটে যাওয়ার নয়। বরং বিজেপির উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর যে সুযোগ মিলেছে, তা ছাড়তে নারাজ সঙ্ঘ নেতৃত্ব। সংগঠন সূত্রের খবর, লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ফলাফল পর্যালোচনা করতে আরএসএস কেরলের পালাক্কাড়ে ৩১ অগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর বৈঠক করবে। দক্ষিণের এই রাজ্যে সঙ্ঘের সবচেয়ে বেশি শাখা থাকলেও এই প্রথম সে রাজ্যে লোকসভা থেকে একটি আসনে জিতেছে বিজেপি।