Ajit Pawar

অজিতকে নিয়ে দর কমেছে বিজেপির, দাবি আরএসএসের

দিন কয়েক আগে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সার্বিক দোষ-ত্রুটি নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৪ ০৭:৪৩
Share:

অজিত পওয়ার। —ফাইল চিত্র।

এনডিএ জোটে এনসিপি নেতা অজিত পওয়ারের অন্তর্ভুক্তিতে ‘ব্র্যান্ড বিজেপি’-র বাজারদর এক ধাক্কায় নেমে গিয়েছে বলে সরব হল আরএসএস। এত দিন আরএসএস নেতারা যে বক্তব্য ঘরোয়া ভাবে বলছিলেন, এ বার দলের মুখপত্রে তা লিখে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন তাঁরা। রাজনীতির অনেকের মতে, সঙ্ঘ ও বিজেপির মধ্যে যে দূরত্ব বাড়ছে তা ফের স্পষ্ট করে দিল নিবন্ধটি।

Advertisement

দিন কয়েক আগে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সার্বিক দোষ-ত্রুটি নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। এ বার মহারাষ্ট্রে এনডিএ-র সার্বিক খারাপ ফলের জন্য অজিত পওয়ারের এনসিপি-র সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের হাত মেলানোকে দায়ী করল আরএসএস। মহারাষ্ট্রে ৪৮টি আসনের মধ্যে এনডিএ পেয়েছে ১৭টি আসন। বিজেপি সাতটি, দুই শরিক শিবসেনা (শিন্দে) ও এনসিপি (অজিত) গোষ্ঠী যথাক্রমে জিতেছে ন’টি ও একটি আসন। পাঁচ বছরের আগের ফল থেকে প্রায় দু’ডজন আসন কম পেয়েছে এনডিএ জোট। প্রশ্ন উঠেছে, অজিতকে জোটে এনে কি আদৌ
লাভ হয়েছে?

মহারাষ্ট্রে রাজ্যসভার দু’টি আসনের মধ্যে একটিতে অজিতের স্ত্রী সুনেত্রাকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে বরামতী কেন্দ্র থেকে এনসিপি (শরদ) নেত্রী সুপ্রিয়া সুলের কাছে হেরে যাওয়ার পরেই সুনেত্রাকে রাজ্যসভায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গেরুয়া শিবিরের মতে, সুনেত্রার নাম নিয়ে আপত্তি থাকায় প্রকাশ্যে মুখ খুলে বিজেপি নেতৃত্বকে বার্তা দিয়েছে আরএসএস। এতে সার্বিক ভাবে জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাওয়ায় আজ এনসিপি নেতা প্রফুল্ল পটেল বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এনসিপি এনডিএ-তেই রয়েছে।’’

Advertisement

সঙ্ঘের মুখপত্রে বলা হয়েছে, অহেতুক রাজনীতির গুটি সাজাতে গিয়ে দল ভাঙানো বিজেপির পক্ষে হিতে বিপরীত হয়েছে। যার উদাহরণ মহারাষ্ট্র। রাজ্যে বিজেপি-শিবসেনা সরকারের প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও এনসিপি-তে ভাঙন ধরানো হয়। যার ফলে অজিত পওয়ার এনডিএতে যোগ দেন।

নিবন্ধে লেখা হয়েছে, অজিতের এনডিতে অন্তর্ভুক্তির ফলে গেরুয়া কর্মীরা মনঃক্ষুণ্ণ হন। কারণ, তাঁরা বরাবরই কংগ্রেসের ভাবধারার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে এসেছেন। (কংগ্রেসি ভাবধারার নেতা) অজিতের এনডিএতে যোগদানে বিজেপি ব্র্যান্ডের বাজারদরও নেমে যায়। এ-ও লেখা হয়েছে, আদি এনসিপি দলের নেতা শরদ পওয়ার দু-তিন বছরের মধ্যে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে আসতেন। দলের নেতৃত্ব নিয়ে তুতো ভাই-বোনদের লড়াই এনসিপিকে আরও দুর্বল করে দিত। সঙ্ঘের মতে, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যে দল প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে, সেই দলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের সঙ্গে জোট করে বিশ্বাসযোগ্যতা হারায় বিজেপি। যার প্রভাব পড়ে ভোটে।

লোকসভা ভোটের আগে থেকেই দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতাদের বিজেপিতে এবং এনডিএ জোটে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়ে ঘোর
আপত্তি ছিল আরএসএসের। কারণ, এতে বিরোধীদের ‘ওয়াশিং মেশিন’ তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। তৃণমূল স্তরে মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় সঙ্ঘ কর্মীদের।

আরএসএসের আপত্তির আর একটি কারণ ছিল, ওই সব বহিরাগত নেতাদের সঙ্ঘের আদর্শ সম্পর্কে কোনও ধারণা না থাকা। আরএসএসের পরামর্শ গ্রাহ্য না করে এ ধরনের নেতাদের টিকিটও দেয় বিজেপি। এই সব অসন্তোষের বিষয়গুলি এত দিন ঘরোয়া ভাবে বিজেপি নেতৃত্বকে জানিয়েছেন সঙ্ঘ নেতৃত্ব। লোকসভার ফল বেরনোর পর বিজেপির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে প্রকাশ্যেই তাঁদের ভুলগুলি তুলে ধরা শুরু করেছে সঙ্ঘ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement