PM Narendra Modi

আলোচনা আগে হল না কেন, প্রশ্ন বিরোধীদের

সংসদে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা-সহ তিনটি বিল পাশের সময় লোকসভা ও রাজ্যসভার ১৪৬ জন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। ২০ ও ২১ ডিসেম্বর প্রথমে লোকসভায়, তার পরে রাজ্যসভায় বিনা বিতর্কে বিল পাশ হয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:৫২
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

কোনও আইন তৈরির আগে প্রথমে সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে আলোচনা হয়। তার পরে বিলের খসড়া তৈরি হয়। তারও পরে সেই বিল সংসদে পেশ হলে তা নিয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়। স্থায়ী কমিটি বিল নিয়ে সব মহলের বক্তব্য শুনে সংসদে রিপোর্ট পেশ করে। সংসদে আলোচনার পরে বিল পাশ করে আইন তৈরি হয়।

Advertisement

মোদী জমানায় আইন তৈরির এই স্বাভাবিক নিয়ম বা প্রথা মানা হচ্ছে না বলে বিরোধীরা বহু দিন ধরেই অভিযোগ তুলছেন। ট্রাক চালকদের ধর্মঘটের পরে সংসদে সদ্য পাশ হওয়া ভারতীয় ন্যায় সংহিতা থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পিছু হটায় মোদী সরকারের আইন তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে বিরোধীরা নতুন করে প্রশ্ন তোলার সুযোগ পেয়ে গেলেন।

ভারতীয় দণ্ডবিধি বদলিয়ে তৈরি ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ধাক্কা মেরে পালানো বা ‘হিট অ্যান্ড রান’-এর অপরাধে গাড়িচালকদের ১০ বছর জেল ও ৭ লক্ষ টাকা জরিমানার শাস্তি বিধানের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে ট্রাক ধর্মঘট শুরু হয়েছিল। অর্থনীতিতে অচলাবস্থা তৈরির ভয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মঙ্গলবার রাতে ঘোষণা করে, নতুন আইনের ওই ধারা এখনও কার্যকর হয়নি। সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে আলোচনার পরেই ধারাটি কার্যকর করা হবে।

Advertisement

এমতাবস্থায় বিরোধীদের বক্তব্য, আগে আলোচনা করে তার পরে আইন তৈরির কথা। আইন তৈরির পরে আলোচনা করার কথা নয়। এ তো পুরো উল্টো নিয়ম। বিরোধীদের প্রশ্ন, মোদী সরকার কি এখন আইন সংশোধন করবে? না কি আইন জারির বিজ্ঞপ্তিতে ওই ধারাটি থাকবে না? এর পরে অন্য মহল থেকে আইনের অন্য কোনও ধারা নিয়ে আপত্তি উঠলে তখন কী হবে?

কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা আজ বলেছেন, ‘‘আইনের উদ্দেশ্য জনগণের জীবন সহজ করা, সুরক্ষিত করা ও ন্যায়ের ব্যবস্থা করা। লক্ষ লক্ষ চালকের উপরে অত্যাচার চালানো, ঘুষ আদায়, বন্দি করে রাখা ও আর্থিক ভাবে দেউলিয়া করে দেওয়া নয়। বিনা আলোচনায়, বিরোধীদের বাদ দিয়ে একতরফা তুঘলকি আইন তৈরি এ বার বন্ধ হওয়া উচিত।’’

সংসদে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা-সহ তিনটি বিল পাশের সময় লোকসভা ও রাজ্যসভার ১৪৬ জন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। ২০ ও ২১ ডিসেম্বর প্রথমে লোকসভায়, তার পরে রাজ্যসভায় বিনা বিতর্কে বিল পাশ হয়ে যায়। ২৫ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি সইও করে দেন। তার এক সপ্তাহ পরেই ট্রাক চালকরা ধর্মঘট শুরু করেন। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ‘‘মোদী সরকারের প্রশাসন চালানো ও আইন তৈরিই হল হিট অ্যান্ড রান বা ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাওয়া। সংসদে বিরোধীদের উপর বুলডোজ়ার চালিয়ে বিল পাশ করানোর আগে আলোচনা জরুরি ছিল।’’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আশ্বাসের পরে অবশ্য দেশের অনেক জায়গাতেই ট্রাকচালকরা কাজে ফিরতে শুরু করেছেন। জ্বালানির অভাবের ভয়ে পেট্রল পাম্পে তেল কেনার লাইন কমতে শুরু করেছে। বুধবারও কিছু জায়গায় প্রতিবাদ হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ভাঙড়ের ঘটকপুকুরে বিক্ষোভে শামিল না হওয়ায় কিছু চালককে জুতোর মালা, চুড়ি পরিয়ে হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অবরোধ করা হয় বাসন্তী হাইওয়ে। বীরভূমের সিউড়ি, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, মালদহের বিভিন্ন সড়কেও বিক্ষোভের ফলে মানুষ দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement