অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
চলতি মাসের ২৩ তারিখ পটনায় বিরোধী শিবিরের বৈঠকের আগে কোন কোন বিষয়ে সব বিরোধী দলই একমত, তার তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু কাঁটা হয়ে উঠেছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। এ নিয়ে আইন কমিশন নতুন করে সক্রিয় হওয়ার পরে কংগ্রেস, তৃণমূল, জেডিইউ, আরজেডি, বামদলগুলি এর বিরোধিতা করছে। কিন্তু অতীতে অরবিন্দ কেজরীওয়াল, উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে সমর্থন জানিয়েছে। বাকি বিরোধী দলগুলি এই বিধির বিরোধিতা করলেও এ বারও কেজরী, উদ্ধব এখনও সে পথে হাঁটছেন না।
আগামী সপ্তাহে পটনা-বৈঠকের আগে এখন বিরোধী দলগুলির মধ্যে কী কী বিষয়ে ঐকমত্য রয়েছে, তার তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, সিবিআই-ইডির মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপব্যবহার নিয়ে সব দলই একমত। সব বিরোধী দল মিলে আমজনতার রুটিরুজি, আর্থিক দুরবস্থার প্রশ্নের জাতীয় স্তরে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়ার ভাবনাচিন্তা করছে। বিজেপির সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধেও মোটের উপরে সকলে একমত।
সূত্রের খবর, বিজেপির বিরুদ্ধে যে যেখানে শক্তিশালী, সেখানে বাকিরা তাকে সমর্থন করুক— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা চলছে। এই তত্ত্ব মানলে লোকসভার প্রায় সাড়ে চারশো আসনে বিজেপির বিরুদ্ধে এক জন সর্বসম্মত প্রার্থী দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে কংগ্রেসকে শ’দুয়েক আসনে লড়তে হবে। এ বিষয়ে কংগ্রেসের আপত্তি রয়েছে।
গত কাল রাতে আইন কমিশন নতুন করে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে সকলের মতামত চেয়েছে। কংগ্রেস আজ অভিযোগ তুলেছে, আইন কমিশনের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট মোদী সরকারের আইন মন্ত্রকের কথাতেই কমিশন এই কাজ করছে। অথচ আগের আইন কমিশন বলেছিল, অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রয়োজন নেই, তা কাম্যও নয়। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের অভিযোগ, রুটিরুজির মতো আসল সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতে, মেরুকরণের জন্যই মোদী সরকার ফের অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে সামনে নিয়ে আসছে। রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন আজ অভিযোগ তুলেছেন, মোদী সরকার চাকরির প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারেনি। লাগাম টানতে পারেনি মূল্যবৃদ্ধিতেও। তাই মরিয়া হয়ে এখন ২০২৪-এর আগে বিভাজনের রাজনীতি উস্কে দিতে চাইছে।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধিতে সব ধর্ম-সম্প্রদায়ের জন্য একই পারিবারিক আইন তৈরি হওয়ার কথা। গেরুয়া শিবির একে শুধু মুসলিমদের শরিয়তি আইন তুলে দেওয়া হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করে— সেখানেই আরজেডি, জেডিইউ, বামদলগুলির আপত্তি। উদ্ধব গোষ্ঠীর নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন, ‘‘আমরা একে সমর্থন করছি। এ নিয়ে বিতর্ক হোক। দেখাই যাক না মানুষের মত কী।’’ অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আইন কমিশন নতুন করে উদ্যোগী হওয়ার পরে কেজরীওয়ালের দলের কেউই এর বিরোধিতা করেনি।