ছবি সংগৃহীত
মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা কমল নাথের বাড়িতে মঙ্গলবার থেকে ‘হনুমান চালিশা’ পাঠ হবে। অযোধ্যায় রামমন্দিরের শিলান্যাসকে স্বাগত জানিয়ে কমল বলেছেন, গোটা দেশের মানুষ রামমন্দিরের আশায় ছিলেন। সকলের ইচ্ছেতেই রামমন্দির নির্মাণ হচ্ছে।
অযোধ্যা যেমন রামের জন্মভূমি বলে মানুষের বিশ্বাস, তেমনই ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরের কাছে চন্দ্রখুরি রামের মামাবাড়ি বলে মনে করা হয়। স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস, চন্দ্রখুরি গ্রামেই রামের মা কৌশল্যার জন্ম হয়েছিল। সেখানে কৌশল্যার মন্দিরও রয়েছে। ছত্তীসগঢ়ের কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল ঘোষণা করেছেন, চন্দ্রখুরির কৌশল্যার মন্দিরকে ১৬ কোটি টাকা খরচ করে সাজানো হবে। কিন্তু যে উত্তরপ্রদেশে রামমন্দির তৈরি হবে, সেই রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা রামমন্দির নিয়ে ‘ন যযৌ, ন তস্থৌ’ অবস্থায়। ২০২২-এ উত্তরপ্রদেশে ভোট। রামমন্দিরের কাজ শুরু করে দিয়ে বিজেপি যাতে পুরো রাজনৈতিক ফায়দা নিয়ে না চলে যায়, তার জন্য কংগ্রেস নেতাদের দাবি, দল রামমন্দিরের পক্ষে স্পষ্ট অবস্থান নিক। কংগ্রেস সূত্রের খবর, সম্প্রতি প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার সঙ্গে বৈঠকে উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতারা এই দাবি তুলেছেন। জিতিন প্রসাদের মতো দলের তরুণ নেতারাও চাইছেন, কমল নাথ যেমন রামমন্দির নির্মাণকে স্বাগত জানিয়েছেন, কংগ্রেসও সরকারি ভাবে সেই অবস্থান নিক।
এআইসিসি-র এক নেতা বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে রাহুল গাঁধীকে শিবভক্ত হিসেবে তুলে ধরা হয়েছিল। রাহুল মন্দিরে মন্দিরে গিয়েছেন। বিজেপি যে ভাবে কংগ্রেসের দিকে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তোলে, তা খারিজ করার একটা চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তাতে পুরোপুরি সাফল্য মেলেনি। কারণ তার আগেই আদালতে কপিল সিব্বলের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিজেপি প্রচার শুরু করে দিয়েছিল, কংগ্রেস রামমন্দিরের কাজে বাধা দিচ্ছে।’’
সুপ্রিম কোর্ট রামমন্দিরের পক্ষে রায় দেওয়ার পরেই কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠক করে আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছিল। একই সঙ্গে কংগ্রেস বলেছিল, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কৃতিত্ব কোনও রাজনৈতিক দল নিতে পারে না। আদালতের রায়ে মন্দির তৈরির রাস্তা খোলার সঙ্গে সঙ্গে বিজেপির মন্দির-রাজনীতিও বন্ধ হবে। বাস্তবে, তার পরেও অমিত শাহ অভিযোগ তুলেছেন, কংগ্রেস বরাবরই মন্দিরের পথে বাধা তৈরি করেছে। এখন রামমন্দিরের শিলান্যাসকে কেন্দ্র করে বিজেপি-আরএসএস থেকে উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকার যে ভাবে উন্মাদনা তৈরি করছে, তাতে প্রমাদ গুনছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতাদের মতে, বিজেপি-আরএসএস যে প্রচারের পুরো আলো নরেন্দ্র মোদী, যোগী আদিত্যনাথ, মোহন ভাগবতের উপরে রাখতে চাইছে, তা স্পষ্ট। সেই কারণে আর কোনও রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এখন কংগ্রেস যদি রামমন্দির নির্মাণ নিয়ে নীরব থাকে, তাতে কোনও লাভ হবে না। বার্তা যাবে, রামমন্দির তৈরিতে কংগ্রেস খুশি নয়। তাতে উত্তরপ্রদেশের ভোটে পাঁচ কদম এগিয়ে দৌড় শুরু করবেন যোগী।