ফারাক: বহুজন সমাজ পার্টির প্রতীক এবং বিতর্কিত মূর্তি।
মূর্তিতে শুঁড় উঁচিয়ে ঐরাবত। কিন্তু ‘প্রতীকে’ শুঁড় নীচে। সুপ্রিম কোর্ট হাতির দাম নিজের পকেট থেকে চোকানোর কথা বলার পর এমনই যুক্তি সামনে নিয়ে এল মায়াবতীর দল। শুধু তাঁর দল নয়, খোদ মায়াবতীও আজ টুইটারে উগরে দেন ক্ষোভ। যে টুইটারে তিনি সদ্য যোগ দিয়েছেন।
বছর দশেক আগে এক দল আইনজীবী অভিযোগ করেন, মায়াবতী সরকার ২৬০০ কোটি টাকা খরচ করেছে নানা স্মারক তৈরির জন্য। সরকারি কোষাগারের ৫২
কোটি টাকা খরচ করে বসানো হয়েছে ৬০টি হাতির মূর্তি। আর এই হাতিই বহুজন সমাজ পার্টির নির্বাচনী প্রতীক। সেই মামলার শুনানিতেই গত কাল সুপ্রিম কোর্ট বলে, এই টাকা নিজের পকেট থেকে শোধ করতে হবে মায়াবতীকে। প্রত্যাশিত ভাবেই বিজেপি শিবির এতে উল্লসিত।
কিন্তু মূর্তি ও স্মারকগুলির আর্থিক দায় যে মায়াবতীর নয়, সেটা
বোঝাতে আজ তিনটে যুক্তি সামনে রাখলেন দলিত নেত্রী এবং তাঁর দলের নেতারা।
এক, হাতির মূর্তিগুলি আদৌ বিএসপির প্রতীক নয়। কারণ, এগুলির শুঁড় তোলা। অতএব দলের প্রচারের অভিযোগ খাটে না।
দুই, ওই সব মূর্তি, পার্ক ও সৌধ আদৌ সরকারি অর্থের অপচয় নয়। কারণ, তা থেকে সরকারের আয় হচ্ছে। টুইটারে মায়াবতী লিখেছেন, ‘‘বঞ্চিত ও শোষিত দলিত ও অন্য অনগ্রসর শ্রেণিতে জন্ম নেওয়া সন্ত-গুরু-মহাপুরুষদের সম্মানে নির্মিত স্মারক এখন উত্তরপ্রদেশের ব্যস্ত পর্যটনস্থল। যার থেকে সরকারেরও নিয়মিত আয় হয়।’’
তিন, মামলার ফয়সালা এখনও হয়নি। চূড়ান্ত রায় হবে ২ এপ্রিল। মায়াবতী লিখেছেন, ‘‘আদালতে নিজেদের পক্ষ রাখা হবে। পুরো আস্থা আছে, আদালত থেকে সুবিচার পাব। বিজেপি আর সংবাদমাধ্যম দয়া করে আকাশে ঘুড়ি ওড়ানো বন্ধ করুক।’’
আরও পড়ুন: বিক্ষোভেও নাগরিকত্ব বিল নিয়ে অনড় মোদী
২০১২ সালে রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে দিল্লি লাগোয়া নয়ডা ও রাজধানী লখনউয়ে হাতি আর মায়াবতীর মূর্তিগুলি ঢেকে দিতে বলে নির্বাচন কমিশন। অতীতে অখিলেশ যাদবও এই মূর্তি বসানোর পিছনে বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু এখন সেই অখিলেশই জোট বেঁধেছেন মায়াবতীর সঙ্গে। ফলে এখন তিনি এই বিতর্ক নিয়ে উল্টো সুর গাইছেন। আর মায়াবতীর দলের নেতারা বলছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের যুক্তি মানলে তো যেখানে যেখানে বিজেপির প্রতীক চিহ্ন ‘পদ্ম’ আছে, সেগুলি বন্ধ করতে হবে। কংগ্রেসের ‘হাত’-এরই বা কী হবে?’’