প্রতীকী ছবি
দু’বছর আগে গুজরাত থেকে রাজ্যসভায় আহমেদ পটেলের জয় ঠেকাতে অমিত শাহের নেতৃত্বে বিজেপি জান লড়িয়ে দিয়েও পারেনি। সনিয়া গাঁধীর ডান হাত আহমেদই শেষ হাসি হেসেছিলেন। দু’বছর পরে এ বার ফের গুজরাত থেকে রাজ্যসভার নির্বাচন। প্রার্থী সে সময় পটেলের নির্বাচনী এজেন্ট শক্তিসিন গোহিল। তাঁকে হারিয়ে এ বার বিজেপি মধুর বদলা নিতে চাইছে। এ বার বিজেপির প্রচেষ্টায় জল ঢেলে দেওয়ার দায়িত্ব ‘টিম রাহুল’-এর উপরে এসে পড়েছে।
এ হেন টানটান চিত্রনাট্যের ‘পলিটিকাল থ্রিলার’-এ শেষ পর্যন্ত কে জিতবে, তা ১৯ জুনের রাজ্যসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরই জানা যাবে। কিন্তু কংগ্রেসের আহমেদ পটেলের গোষ্ঠীর সঙ্গে ‘টিম রাহুল’-এর ক্ষমতা দখলের লড়াইয়েও এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হতে চলেছে বলে কংগ্রেসের নেতারা মনে করছেন। তাঁদের মতে, গুজরাতের এই রাজ্যসভার ভোট বলে দেবে, ‘টিম রাহুল’-এর তরুণ তুর্কিরা আহমেদ ভাইয়ের মতো ধুরন্ধর রাজনীতিক হয়ে উঠতে পেরেছেন কি না। এটা নবীন ব্রিগেডের ‘অ্যাসিড টেস্ট’।
গুজরাত থেকে রাজ্যসভার ৪টি আসনে নির্বাচন। সহজ হিসেবে, কংগ্রেস পেত দু’টি, বিজেপি দু’টি। কিন্তু বিজেপি ৩ জন প্রার্থী খাড়া করেছে। ভোটের দিন ঘোষণা হতেই কংগ্রেসের তিন বিধায়ক পদত্যাগ করেছেন। ফলে কংগ্রেসকে দু’টির বদলে একটি আসন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে বলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
কংগ্রেস সভাপতি পদে থাকার সময় রাহুল গাঁধী গুজরাতের দায়িত্ব তাঁর আস্থাভাজন তরুণ নেতা রাজীব সতাভের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। সতাভ এখনও হাল ছাড়তে নারাজ। তাঁর যুক্তি, “দ্বিতীয় আসন জিততে আমাদের একটি বাড়তি ভোট দরকার।” কিন্তু রাজ্যসভা ভোটের এখনও ১২ দিন দেরি। গত দু’বছরে কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ৮১ থেকে ৬৫-তে নেমে এসেছে। বিজেপি নেতারা বলছেন, এখনও খেলা বাকি। বিজেপি যে আরও বিধায়ক ভাঙাতে পারে, তা বুঝে ৬৫ জন বিধায়ককে তিন ভাগে ভাগ করে রাজস্থান, রাজকোট ও ভডোদরার রিসর্টে পাঠানো হয়েছে। আহমেদ পটেলকে হারাতেও যে বিজেপি একই চেষ্টা করেছিল, কিন্তু কংগ্রেসই শেষে বাজিমাত করেছিল, তা মনে করিয়ে দিয়ে সতাভ বলেন, “আমরাও হাত গুটিয়ে বসে নেই।”
রাজনৈতিক শিবির মনে করছে, কংগ্রেসের দুই প্রার্থী— শক্তিসিন গোহিল ও ভরতসিন সোলাঙ্কির মধ্যে বিজেপির ‘টার্গেট’ গোহিল। কারণ তিনি আহমেদের নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে বিজেপিকে শেষ বেলায় টেক্কা দিয়েছিলেন। তিনি আবার টিম রাহুলের সদস্য। বিজেপির এই ছক বুঝতে পেরেই কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দলের বিধায়করা প্রথমে গোহিলের জয় নিশ্চিত করতে ভোট দেবেন। কিন্তু বিজেপি সেই ছক ভেস্তে দিতে মরিয়া। কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, এই লড়াইয়ে শেষ বেলায় অহমেদ পটেল রাহুল গাঁধীর তরুণ তুর্কির পাশে দাঁড়ান কি না, সেটাও দেখার।