হানান হামিদ। ফাইল চিত্র।
‘‘নিন্দুকদের ধন্যবাদ। তাঁদের কাছ থেকেই আমি একটা শিক্ষা পেলাম। শুভবুদ্ধির সঙ্গে থাকার শিক্ষা।’’ সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে ট্রোলিংয়ের মূল অভিযুক্তের গ্রেফতারের পরে আনন্দবাজারকে এই প্রতিক্রিয়াই দিলেন কেরলের ছাত্রী হানান হামিদ।
শনিবার হানান ফোনে জানান, এই গ্রেফতারির খবরে তিনি অনেকটা নিশ্চিন্ত বোধ করছেন। কারণ গত কয়েক দিনে তাঁর ঘুম কেড়ে নিয়েছিল নির্দয় ট্রোলিং। রসায়নে স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী হানান পড়াশোনা ও সংসার চালাতে কলেজের পরে মাছ বিক্রি করেন। শুধু তাই নয়, স্বামী-বিচ্ছিন্না মাকে সাহায্য করতে তিনি নানা ছবিতে জুনিয়র আর্টিস্ট হিসেবেও অভিনয় করেন। তাঁর এই সংগ্রামের খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে নিয়ে ট্রোল শুরু হয়।
অভিযোগের তির ছিল নুরউদ্দিন শেখ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে, যিনি ফেসবুক লাইভ করে দাবি করেন হানান মিথ্যে বলছেন। সিনেমায় রোল পেতেই নাকি হানান মাছবিক্রেতার ‘অভিনয়’ করেছেন বলে দাবি করেন নুরউদ্দিন। সেই সুরে সুর মিলিয়ে শুরু হয় ট্রোলিং। সোশ্যাল মিডিয়ায় নাগাড়ে নির্দয় ট্রোলিংয়ে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন বছর উনিশের কলেজছাত্রী। কান্নাভেজা চোখে বলেন, ‘‘সত্যি বলছি, আমাকে রেহাই দিন।’’
কেরলের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন হানানের পাশে দাঁড়ান। তিনি বলেন, ‘‘এক জন কঠোর পরিশ্রমী মহিলার উপরে কোনও ধরনের আক্রমণই নিন্দনীয়।’’ শুক্রবার খোদ কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন হানানের সমর্থনে ফেসবুক পোস্ট করেন। তার পরেই পুলিশ সাইবার আক্রমণের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। শনিবার গ্রেফতার করা হয় নুরউদ্দিনকে। তার বিরুদ্ধে আইটি আইনের একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। হানানের কথায়, ‘‘এমনিতেই পিঠের ব্যথার জন্য আমার চিকিৎসা চলছে। তার উপর যে ঝড় বয়ে গেল, তা ভাষায় বলা সম্ভব নয়।’’