ভোর ৩টে। ভারতের নবীনতম রাজ্য তেলঙ্গানার রাজধানী হায়দরাবাদে ধরপাকড় চলছে। অভিযোগ, বেকার যুবকদের নিয়ে প্রতিবাদ মিছিলের পরিকল্পনা করেছিলেন এঁরা।
কিছু ক্ষণ পর মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওকে দেখা গেল অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতির ভেঙ্কটেশের মন্দিরে। খাঁটি সোনার ৩টি হার মন্দিরে দান করছেন পট্টবস্ত্র পরিহিত মুখ্যমন্ত্রী। পরে দেবী পদ্মাবতীর মন্দিরে মহামূল্য নাকছাবি দান করলেন ‘কেসিআর’। সাংবাদিকদের বললেন, ‘‘ঋণ মেটালাম। তেলুগুভাষী দুই রাজ্যেরই মঙ্গল হবে।’’ পৃথক তেলঙ্গানা রাজ্যের জন্য আন্দোলন যখন চলছে, তখনই নাকি মন্দিরে গয়না দানের এই মানত করেছিলেন রাও। বিতর্কটা ঘনাচ্ছে সেখান থেকেই। কারণ, দুই মন্দিরে দান করা মোট সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার ওই অলঙ্কারের বিল মিটিয়েছে তেলঙ্গানা সরকার। তিরুপতির কর্তাব্যক্তিরাও খোলাখুলি জানাচ্ছেন, এর আগে কোনও রাজ্যের সরকার এই মন্দিরে অলঙ্কার দান করেছে বলে তাঁদের জানা নেই।
অনেকের প্রশ্ন, মানত না হয় করেছিলেন চন্দ্রশেখর রাও নিজে। তা বলে সেই টাকা আমজনতার পকেট থেকে নেওয়া হবে কেন? বরং রাজ্যে যখন বেকারদের ক্ষোভ জমছে, তখন এই সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা নতুন কর্মসংস্থান তৈরিতেও তো কাজে আসতে পারত! তা ছাড়া, তেলঙ্গানার মতো নবীন রাজ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন পরিকাঠামো গড়তেও মোটা খরচ খরচ হওয়ার কথা। তা না করে করদাতাদের টাকায় এ ভাবে খয়রাতি কেন? প্রশাসনের তরফে কোনও উত্তর নেই। উল্টে জানা যাচ্ছে, দিন দুয়েকের মধ্যেই কেসিআর-এর গন্তব্য হবে অন্ধ্রেরই অনন্তপুরের বীরভদ্র মন্দির। সেখানে কী দান করবেন মুখ্যমন্ত্রী? সোনার তৈরি একজোড়া গোঁফ! এ ছাড়া দেবী কনকদুর্গাকে দেবেন নাকছাবি, দেবী ভদ্রকালীকে মুকুট। বলা বাহুল্য— সবই সোনার!
জনতার টাকার এই নয়ছয়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই মামলার হুমকি দিয়েছে তেলঙ্গানা প্রদেশ কংগ্রেস। ফলে মানত করেও স্বস্তিতে নেই কেসিআর।