দিল্লিতে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল গাঁধী এবং চন্দ্রবাবু নায়ডু। ছবি: পিটিআই
বিজেপির সঙ্গে তিন দশকের সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে কয়েক মাস আগেই। এবার সরাসরি কংগ্রেসের হাত ধরলেন তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) সুপ্রিমো চন্দ্রবাবু নায়ডু। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বৈঠকের পর ঘোষণা করলেন, আসন্ন তেলঙ্গানা বিধানসভার ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে ভোটে লড়বে টি়ডিপি। একইসঙ্গে আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনেও বৃহত্তর বিরোধী জোট গড়ার ক্ষেত্রে তিনিই যে মুখ্য ভূমিকা নিতে চলেছেন, তাও এদিন হাবেভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন চন্দ্রবাবু।
টিডিপি প্রধান এদিন বলেন, গণতন্ত্র রক্ষা করার তাগিদেই সব বিরোধী শক্তির এক হয়ে বিজেপিকে হারানো উচিত। একই সুরে রাহুল গাঁধীও বলেন, গণতন্ত্র বাঁচানো এবং দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে রক্ষার তাগিদেই একজোট হওয়া দরকার।
বৃহস্পতিবার চন্দ্রবাবু-রাহুল দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয়। তারপর যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে টিডিপি প্রধান বলেন, ‘‘অতীত বলে আর কিছু নেই। অতীত ভুলে বর্তমান এবং সামনের দিকে তাকাতে হবে। গণতান্ত্রিক বাধ্যবাধকতা থেকেই আমরা কাছাকাছি এসেছি। এই মুহূর্তে দেশের যা পরিস্থিতি, তাতে সব বিরোধীদের একজোট হওয়া উচিত।’’ কিন্তু বিরোধী জোটের নেতা কে হবেন? এই প্রশ্ন এড়িয়ে অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আসল কথা বিজেপিকে হারাতে হবে। বাকি সব পরে ঠিক করা যাবে।’’
আরও পড়ুন: ভাবা হচ্ছে ‘নিরাপদ’ আসনের কথা, ডায়মন্ড হারবারে আর দাঁড়াচ্ছেন না অভিষেক
অন্যদিকে রাহুল বলেন, ‘‘দেশ এবং গণতন্ত্র বিপন্ন। দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। এগুলি রক্ষা করতেই বিরোধী জোটগুলির একজোট হয়ে বিজেপিকে হারানো উচিত।
এ বছরের মার্চেই প্রায় ত্রিশ বছরের সম্পর্ক ত্যাগ করে এনডিএ জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন চন্দ্রবাবু। অভিযোগ তোলেন, অন্ধ্রপ্রদেশকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার কথা বললেও সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি কেন্দ্র তথা বিজেপি সরকার। এর পর থেকেই কংগ্রেস এবং অন্য বিরোধীদের সঙ্গে সখ্য বাড়ে চন্দ্রবাবুর।
আরও পডু়ন: কলকাতা-সহ সব বড় শহরের আকাশে ক্ষেপণাস্ত্ররোধী ঢাল তৈরি করছে ভারত
তার মধ্যেই রাজধানীতে বৃহত্তর বিরোধী জোট নিয়ে জল্পনা, আলোচনা শুরু হয়। তাতেও মুখ্য ভূমিকা নেন চন্দ্রবাবু। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এনসিপির শরদ পওয়ার, ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ফারুক আবদুল্লা, আপ সুপ্রিমো তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল, জনতা দল সেকুলার এর প্রধান এইচ ডি কুমারস্বামী-সহ বিরোধী শিবিরের প্রায় সব নেতার সঙ্গে আলোচনা হয়। অগস্ট মাসের গোড়াতেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রবাবু নায়ডু-সহ বিরোধী নেতাদের কথা হয়েছে। তারপরও বিরোধী আঞ্চলিক শক্তিগুলিকে একজোট করতে দৌত্য চালিয়ে যাচ্ছিলেন চন্দ্রবাবু। এরপর বৃহস্পতিবার কংগ্রেস-টিডিপির সহাবস্থান শাসক শিবিরে চাপ বাড়াবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।