অরুণা শানবাগ-১৯৭৩: চরম নৃশংসতার চিহ্ন নিজের শরীরে নিয়ে ৪২ বছর জড় পদার্থের মতো বেঁচেছিলেন অরুণা শানবাগ। মুম্বইয়ের কিঙ্গ এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল হাসপাতালের কর্মী ছিলেন অরুণা। তাঁরই সহকর্মী সোহনলাল বাল্মিকীর হাতে নিষ্ঠুর ভাবে ধর্ষিত হতে হয়েছিল অরুণাকে। সেই সময় সারা দেশে ঝড় তুলেছিল অরুণা শানবাগ ধর্ষণ মামলা। তবে ধর্ষণ নয়, অরুণাকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে মাত্র ৭ বছর জেল খেটে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিলেন সোহনলাল। পরে অবশ্য এই অরুণাই ভারতে নিষ্কৃতি-মৃত্যু বিতর্কের অন্যতম মুখ হয়ে রয়ে গিয়েছেন।
গীতা চোপড়া মামলা-১৯৭৮: সেই সময় গীতা চোপড়ার ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দিল্লিকে। গীতা ও গীতার ভাই সঞ্জয়কে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল যশবীর সিংহ ওরফে বিল্লা ও কুলজিৎ সিংহ ওরফে রাঙ্গা। এরপর গোপন ডেরায় নিয়ে গিয়ে গীতাকে ধর্ষণ করে তারা। দুই ভাইবোনকেই নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়। ১৯৮২-তে ফাঁসি হয় ওই দুই ধর্ষকের।
মথুরা ধর্ষণ মামলা-১৯৭৮: মথুরার দেশাইগঞ্জ পুলিশ স্টেশনে এক আদিবাসী মহিলাকে ধর্ষণ করেছিল দুই পুলিশ কনস্টেবল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে মথুরা মামলার রায় ওই দুই পুলিশকর্মীর পক্ষেই গিয়েছিল। সেই সময় এই রায়ের বিরুদ্ধে এবং ধর্ষণ আইনে পরিবর্তন আনার দাবিতে সারা দেশ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল।
প্রিয়দর্শিনী মাতো-১৯৯৬: নয়াদিল্লিতে নিজের ঘরেই ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল বছর পঁচিশের আইনের ছাত্রী প্রিয়দর্শিনীকে। এই ঘটনার ১০ বছর পর প্রিয়দর্শিনীর সহপাঠী সন্তোষ কুমার সিংহকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির সাজা দেয় দিল্লি হাইকোর্ট। মামলা যায় সুপ্রিম কোর্টে। শীর্ষ আদালত সন্তোষের সাজার পরিমাণ কমিয়ে যাবজ্জীবন করে।
সৌমা ধর্ষণ মামলা-২০১১: ২০১১-র ১ ফেব্রুয়ারি। লোকাল ট্রেনে করে কেরলের এর্নাকুলাম থেকে শোরনুরে যাচ্ছিলেন বছর তেইশের সৌমা। ভাল্লাথোল নগর স্টেশনে তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়। বাধা দিতে গেলে তাঁকে ট্রেন থেকে ফেলে দেয় অভিযুক্ত গোবিন্দচামি। এরপর ট্রেন থেকে নেমে আহত সৌমাকে ধর্ষণ করে খুন করে গোবিন্দ। শীর্ষ আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন সাজা পায় গোবিন্দ।
হেতাল পারেখ-১৯৯০: কলকাতার বাসিন্দা হেতাল বাবা, মা ও ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন। তাঁদের হাউজিংয়ের নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন ধনঞ্জয়। এক দিন বাড়িতে হেতালের একা থাকার সুযোগ নিয়ে হেতালকে ধর্ষণ করে খুন করে ধনঞ্জয়। তাকে ফাঁসির সাজা শোনায় শীর্ষ আদালত। তার প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দিয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালাম।
নির্ভয়া মামলা: ২০১২-র ১৬ ডিসেম্বর দিনটি মনে রাখবে ভারত। ওই দিন রাতে বন্ধুর সঙ্গে বাসে করে ফেরার সময় নয়াদিল্লির রাস্তায় নৃশংস ভাবে ধর্ষিত হতে হয়েছিল জ্যোতি ওরফে নির্ভয়াকে। দিন কয়েক যমে মানুষে টানাটানির পর হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। গ্রেফতার করা হয় ছয় অভিযুক্তকে। এর মধ্যে রাম সিংহ জেলের মধ্যেই আত্মহত্যা করেন। নাবালক হওয়ায় জুভেনাইল আদালতে বিচার হয় এক অভিযুক্তের। বাকি চার অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজা শোনানো হয়।