—ফাইল চিত্র।
সুষমা স্বরাজের মৃত্যুতে শোক ছড়াল মালদহের প্রত্যন্ত গ্রামেও। প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতায় আজকে বিশেষ করে যেন তাঁকে স্মরণ করছে পুরাতন মালদহ ব্লকের মহিষবাথানি পঞ্চায়েতের ৩৫ যুবকের পরিবার।
সূত্রের খবর, মহিষবাথানিরই বলরামপুর, বরকল, রাহুতগাওঁ, চণ্ডীতলা-সহ একাধিক গ্রামের জনা ৩৫ যুবককে কাজে নিয়ে গিয়ে মালয়েশিয়াতে আটকে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনা দেড় বছর আগের। পরিবারের লোকেরা যোগাযোগ করেন সে সময়ের সাংসদ মৌসম নুরের সঙ্গে। মৌসমের চেষ্টায় তৎকালীন বিদেশ মন্ত্রী সুষমার হস্তক্ষেপেই মালয়েশিয়া থেকে বাড়িতে ফিরতে ফেরেছিলেন তাঁরা। যাঁর চেষ্টায় ঘরের ছেলেরা ঘরে ফিরল, সেই নেত্রীর মৃত্যুতে স্বভাবতই বুধবার শোকের ছায়া দেখা গেল মহিষবাথানির ওই গ্রামগুলিতে।
২০১৭ সালে মুম্বইয়ের এক সংস্থার হাত ধরে বহুতলের নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে মহিষবাথানির ৩৫ জনের সঙ্গে মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন বলরামপুর গ্রামের উজ্জ্বল সাহা ও তাঁর ভাই সহদেব সাহাও। উজ্জ্বলের অভিযোগ, ‘‘কয়েক মাস ঠিকঠাক চললেও তার পর থেকেই সংস্থার লোকজন আমাদের উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। মাঝেমধ্যেই অভুক্ত রাখা হত। মজুরির টাকা ঠিক মতো দেওয়া হত না। বললেই জুটত মার। দেশে ফেরার কথা বললে আমাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে গিয়েছিল।’’
শেষ পর্যন্ত আসাদুর রহমান নামে এক শ্রমিক কোনও রকমে বাড়িতে ফোন করে এ ঘটনা জানান। তাঁর পরিবার মৌসমের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সাংসদ বিষয়টি তৎকালীন বিদেশ মন্ত্রী সুষমাকে জানালে মালয়েশিয়ার ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করেন তাঁরাই।
উজ্জ্বল বলেন, ‘‘সুষমা স্বরাজের ঋণ জীবনে ভোলার নয়। তাঁর মৃত্যুর খবরে খুবই কারাপ লাগছে।’’
উজ্জ্বল অবশ্য এখন বিহারের পটনায় বৈদ্যুতিক টাওয়ার তৈরির কাজ করছেন। বরকলের আর এক শ্রমিক রবিউল হক বলেন, ‘‘সুষমার জন্যই আমরা নতুন করে জীবন ফিরে পেয়েছি। না হলে হয়তো মালয়েশিয়াতে পচে মরতে হত। এ দিন সকালে টেলিভিশনে তাঁর মৃত্যুর খবরটা জানতে পারি। খুবই কষ্ট হচ্ছে।’’