ছবি পিটিআই।
কর্নাটকে কি তা হলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ দেখা দিল? যে ভাবে দৈনিক সংক্রমণ এক লাফে দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে, তা দেখে তেমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
মহারাষ্ট্র এবং কেরলে উদ্বেগজনক ভাবে সংক্রমণ বৃদ্ধিতে প্রশাসনের কপালে চাওড়া ভাঁজ পড়েছে। কর্নাটকেও একই ছবি সেই উদ্বেগকে আরও বাড়িয়েছে। এক মাসের মধ্যে কর্নাটকের দৈনিক সংক্রমণ দ্বিগুণ হয়েছে। যার বেশির ভাগই বেঙ্গালুরুতে। ১৩ ফেব্রুয়ারি বেঙ্গালুরুতে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ২৫৮। ১৩ মার্চ সেই সংখ্যাটা দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩০। ফলে রাজ্যের মোট কোভিড আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে।
রাজ্যের এক বেসরকারি হাসপাতালের সভাপতি চিকিৎসক প্রসন্ন এইচএম জানাচ্ছেন, গত মাসে কর্নাটকে ২০০-৩০০ ছিল দৈনিক সংক্রমণ। হঠাৎ করে এই সংখ্যাটা বাড়তে শুরু করেছে। জ্বরের উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। তাঁর মতে, এখনও আরও ১ বা ২ সপ্তাহ পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে হবে। বর্তমানে দৈনিক সংক্রমণ বেড়ে ৫০০-৬০০ হয়েছে। আগামী ১ বা ২ সপ্তাহের মধ্যে সংখ্যাটা ১২০০ থেকে ১৫০০ হলে তখন বুঝতে হবে, রাজ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গিয়েছে।
আরও এক চিকিৎসক কার্তিক এ-র কথায়, “রাজ্যে মানুষের যাতায়াত বেড়েছে। করোনা সংক্রমিত এলাকা থেকে অনেকেই এ দিক ও দিক যাচ্ছেন। তা ছাড়া নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও বেড়েছে। ফলে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য জমায়েত, অনুষ্ঠানকেও দায়ী করছেন কার্তিক। তাঁর মতে, রাজ্যবাসীর মধ্যে কোভিড নিয়ে ভীতি উবে গিয়েছে। ফলে অনেকে কোভিড বিধি মানছেন না। যার জেরে হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ।
রাজ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা কোভিডবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন, যাঁরা মাস্ক পরবেন না বা কোভিড সংক্রান্ত সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন করবেন তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রবিবার তিনি মহারাষ্ট্রের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, “পড়শি রাজ্য মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ বাড়ছে। কর্নাটকে সংক্রমণ রুখতে সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য রাজ্যবাসীকেই এগিয়ে আসতে হবে।” তবে এখনই লকডাউন জারি করবেন না বলেও জানিয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা।
মহারাষ্ট্র এবং কেরলে সংক্রমণ বৃদ্ধিতে কড়া পদক্ষেপ করছে রাজ্য প্রশাসন। মহারাষ্ট্রের বহু জায়গায় আংশিক লকডাউন জারি করা হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে রাজ্যবাসীকে সতর্কবার্তা দিয়েছেন, এখনই যদি তাঁরা সচেতন না হন, তা হলে পূর্ণ লকডাউনের মতো পদক্ষেপ করা হবে।