কোহিনুর ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারি পদক্ষেপের আর্জি গুরুত্ব দিয়ে শুনতে রাজি হল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুরের মতে, এই বিষয়ে দীর্ঘ শুনানি হওয়া প্রয়োজন।
ভারতে কোহিনুর ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্র উপযুক্ত পদক্ষেপ করুক, এই দাবি জানিয়ে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের নেতৃত্বে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করে। এর আগে কেন্দ্রের তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়, ব্রিটিশরা চুরি করে কোহিনুর নিয়ে যায়নি। ব্রিটিশদের হিরেটি উপহার দেওয়া হয়েছিল। কাজেই তা ফেরত আনার চেষ্টা করাও উচিত নয়। এর পরেই জনস্বার্থ মামলা করেন সুখেন্দুবাবু। আজ প্রধান বিচারপতির এজলাসে মামলা উঠলে আবেদনকারীর তরফে যুক্তি দেওয়া হয়, কোহিনুর মোটেই ব্রিটিশদের উপহার দেওয়া হয়নি। তাই ভারত সরকারের এটি ফেরানোর চেষ্টা করা উচিত। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও সরব হওয়া দরকার। এই যুক্তি শুনেই বিচারপতি ঠাকুর মন্তব্য করেন, ‘‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশদে এই বিষয়টি শোনা দরকার।’’
এর আগে কোহিনুর ফিরিয়ে আনার দাবিতে দিল্লির একটি সংগঠন শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা করে। এপ্রিল মাসে তারই শুনানিতে কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল রঞ্জিত কুমার জানিয়েছিলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রক মনে করছে কোহিনুর ফেরত আনার চেষ্টা করা ঠিক নয়। কারণ, ওই হিরে চুরি করে ব্রিটেনে নিয়ে যাওয়া হয়নি। কেউ তা জোর করে ছিনিয়েও নেয়নি। ব্রিটিশদের হিরেটি উপহার দেওয়া হয়েছিল। সলিসিটর জেনারেলের মুখে এ কথা শুনে তাজ্জব হয়ে গিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতিও। মন্তব্য করেন, ‘‘যা বলছেন, তার অর্থ বুঝতে পারছেন তো! ভবিষ্যতে কোহিনুর হিরে নিয়ে আইনি পথে দাবি জানাতে কিন্তু সমস্যা হবে এতে। ওরাই (ব্রিটেন) বলবে, আপনাদের দেশের আদালতই তো কোহিনুর ফেরানোর আর্জি খারিজ করে দিয়েছে।’’ এর পরে সরকারকে সব দিক খতিয়ে দেখে স্পষ্ট অবস্থান জানানোর নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। আজ প্রধান বিচারপতি জানান, নতুন জনস্বার্থ মামলার নথিও খতিয়ে দেখে সরকার মতামত জানাক। দু’টি মামলারই ২৫ জুলাই শুনানি হবে।
আজ প্রধান বিচারপতির ইতিবাচক মনোভাবে উচ্ছ্বসিত সুখেন্দুবাবু জানান, তাঁর প্রশ্নের উত্তরে সংস্কৃতি মন্ত্রক জানায়, কোহিনুরে ভারতীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্যপূর্ণ সামগ্রী বলেই সরকার মনে করে। সে ক্ষেত্রে সরকারের উপর তা ফিরিয়ে আনার দায়ও বর্তায়।