ফাইল চিত্র।
হরিদ্বারের ধর্ম সংসদ থেকে সংখ্যালঘুদের নিশানা করে ঘৃণা ছড়ানো হলেও উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষব্যক্তিরাও এ নিয়ে মুখ খোলেননি। উল্টে উত্তরপ্রদেশ সরকারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য সাধুদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে সওয়াল করেছিলেন।
আজ সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রের মোদী সরকার ও উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকারের জবাব চেয়ে নোটিস জারি করল। দশ দিনের মধ্যে কেন্দ্র ও রাজ্যকে এ বিষয়ে হলফনামা জমা দিতে হবে।
ধর্ম সংসদ থেকে ঘৃণা ভাষণে নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত চেয়ে পটনা হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অঞ্জনা প্রকাশ সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, হরিদ্বারের ধর্ম সংসদে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যে ধরনের উস্কানিমূলক মন্তব্য করা হয়েছে, তা দেশের ঐক্য ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে বিপজ্জনক। দেশের লক্ষ লক্ষ মুসলিম নাগরিকের জীবন নিয়েও আশঙ্কা তৈরি করেছে। পুলিশ অফিসারদের দেখা যাচ্ছে, তাঁরা অভিযুক্তদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা মেনে নিচ্ছেন। সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের আঁতাতও ফুটে উঠেছে।
আজ মামলাকারীর হয়ে আইনজীবী কপিল সিব্বল যুক্তি দেন, হরিদ্বার ধর্ম সংসদ গোটা দেশের পরিবেশ কলুষিত করছে। গণতন্ত্রের মূল্যবোধে ক্ষয় ধরাচ্ছে। দ্রুত পদক্ষেপ করা না হলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে উনা, দাসনা, কুরুক্ষেত্রে একই রকম ধর্ম সংসদের আয়োজন করা হয়েছে। ২৪ জানুয়ারি আলিগড়ে ধর্ম সংসদ রয়েছে। এই সব অনুষ্ঠান দেশের পরিবেশ আরও দূষিত করবে। তার আগেই সুপ্রিম কোর্টে শুনানির আর্জি জানান সিব্বল। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার বেঞ্চ জানিয়েছে, একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে মামলাকারীরা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
এর আগে গোরক্ষক বাহিনীর নামে ভিড় জমিয়ে পিটিয়ে খুনের বিরুদ্ধে কী কী পদক্ষেপ করতে হবে, সুপ্রিম কোর্ট তার নির্দেশিকা তৈরি করে দিয়েছিল। প্রবীণ আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ বলেন, আদালতের সেই নির্দেশিকাও মানা হচ্ছে না। সুপ্রিম কোর্টে অন্য বেঞ্চেও ঘৃণা ভাষণের বিরুদ্ধে মামলা ঝুলে রয়েছে বলে আদালতকে জানানো হয়। সিব্বল অবশ্য আর্জি জানিয়েছেন, ধর্ম সংসদের বিষয়টি আলাদা ভাবে বিচার হোক।
আইনজীবীদের ব্যাখ্যা, কেন ধর্ম সংসদ থেকে খোলাখুলি গণহত্যা ও জাতিবিলোপের ডাক দেওয়া হলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে, এর ফলে সংবিধানের লঙ্ঘন হয়েছে কি না, পুলিশের দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতি ছিল কি না, তার জবাব দিতে হবে কেন্দ্র ও বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ড সরকারকে।