রাজনীতির সঙ্গে ধর্ম মিশিয়ে ফেললেই সমস্যা তৈরি হয়, দাবি করলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদ্বয়। —ফাইল চিত্র।
ভোট আসলেই যেন শুরু হয় ঘৃণাভাষণ। এর আগেও এ নিয়ে সরব হয়েছে নাগরিক সমাজ, সংবাদমাধ্যমের একাংশ। এ বার উষ্মা প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার সুপ্রিম কোর্টে এক মামলার শুনানিতে রাজনীতিকদের ঘৃণাভাষণ নিয়ে সরব হলেন বিচারপতি কেএম জোসেফ এবং বিভি নাগরত্নের বেঞ্চ। বিচারপতিদ্বয়ের দাবি, জওহরলাল নেহরু এবং অটল বিহারী বাজপেয়ী যখন প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন, তখন মধ্যরাত্রে সভার আয়োজন করা হলেও তাঁদের ভাষণ শুনতে দূর দূরান্ত থেকে সেই সভায় লোক জমায়েত হতেন।
তবে, বর্তমানে পরিস্থিতি ভিন্ন। এখনকার রাজনীতিকেরা তাঁদের কাজের সঙ্গে ধর্মকে মিশিয়ে দিচ্ছেন বলে দাবি করেছেন বিচারপতি জোসেফ। জনসভায় ঘৃণাভাষণ রুখতে পদক্ষেপ না করার জন্য মহারাষ্ট্র সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে অবমাননার আর্জি জানিয়ে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে বিচারপতি জোসেফ বলেন, ‘‘ধর্ম এবং রাজনীতি দু’টি সম্পূর্ণ আলাদা। একে অপরের সঙ্গে মিশে গেলেই মুশকিল। এখনকার রাজনীতিকেরা রাজনীতির সঙ্গে ধর্মকে মিশিয়ে ফেলেন। এখানেই যত সমস্যা তৈরি হয়। রাজনীতির ক্ষেত্রে ধর্মকে ব্যবহার করা থামিয়ে দিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। ঘৃণাভাষণের সম্ভাবনাও থাকবে না।’’
বিচারপতিদের মন্তব্য, প্রতিটি ক্রিয়ার সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাঁরা সংবিধান মেনেই সব কাজের সমাধান বার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ঘৃণাভাষণের ক্ষেত্রে রাজ্য এবং কেন্দ্র কোনও দায়ভার নিচ্ছে না বলে জানায় বিচারপতিরা। তাঁরা বলেন, ‘‘রাজ্য কোনও পদক্ষেপ করছে না বলে আমাদের হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে। রাজ্যে ক্ষমতাহীন হয়ে বসে রয়েছে। নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকলে ক্ষমতায় থাকার অর্থ কী?’’
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা এই প্রসঙ্গে জানান যে, কেন্দ্র চুপ করে বসে নেই। পিএফআই-কে নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্যের ব্যাপারে কোনও রকম মন্তব্য করতে পারবেন না তুষার। কিন্তু এই দায়িত্ব শুধুমাত্র রাজ্য বা কেন্দ্রের নয়। প্রতিটি ভারতবাসীকে এর বিরুদ্ধে এগিয়ে আসতে হবে। টেলিভিশন বা অন্যান্য মাধ্যমে কেউ বিদ্বেষমূলক কথা ছড়ালে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করতে হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ।