ওবিসি মুসলিমদের সংরক্ষণ বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে কর্নাটকের বিজেপি সরকার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিধানসভা ভোট ঘোষণার আগেই কর্নাটকের ওবিসি মুসলিমদের ৪ শতাংশ সংরক্ষণ বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল সে রাজ্যের বিজেপি সরকার। বৃহস্পতিবার সেই সরকারি চাকরি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অনগ্রসর মুসলিমদের সুবিধা পাওয়ার অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার সমালোচনা করল সুপ্রিম কোর্ট।
শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘‘প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে বলা যায়, একেবারে ভুল ধারণার ভিত্তিতে কর্নাটক সরকার মুসলিমদের জন্য বরাদ্দ ৪ শতাংশ কোটা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’ ওবিসি মুসলিমদের ৪ শতাংশ কোটা বাতিল করে সে রাজ্যের দুই প্রভাবশালী গোষ্ঠী লিঙ্গায়েত এবং ভোক্কালিগাদের জন্য ২ শতাংশ করে সংরক্ষণ বরাদ্দ করেছিল মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের সরকার। সুপ্রিম কোর্ট আগামী মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) পর্যন্ত তা স্থগিত রাখতে বলেছে। ওই দিনই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
শীর্ষ আদালতের বৃহস্পতিবারের পর্যবেক্ষণ এবং নির্দেশের ফলে আইনগত ভাবে বিজেপি কিছুটা বেকায়দায় পড়লেও এর ফলে ভোটের কর্নাটকে মেরুকরণের রাজনীতিতে সুবিধা হবে বলে ভোট পণ্ডিতদের একাংশ মনে করছেন। তাঁদের মতে, লিঙ্গায়েত এবং ভোক্কালিগা কর্নাটকে সবচেয়ে বড় দুই জনগোষ্ঠী। সামাজিক প্রতিষ্ঠার দিক থেকেও উচ্চ বর্ণের ওই দুই শ্রেণি যথেষ্ট ‘সুরক্ষিত’। লিঙ্গায়েতদের বড় অংশ বিজেপি সমর্থক হলেও ভোক্কালিগারা মূলত কংগ্রেস এবং জেডি(এস) শিবিরে বিভক্ত। সংরক্ষণের সুবিধা তাঁদের একাংশকে পদ্মমুখী করতে পারে।
দু’সপ্তাহ আগে কর্নাটকে গিয়ে এই ভোট-কৌশলেরই বার্তা দিয়েছিলেন অমিত শাহ। কংগ্রেস ধর্মের ভিত্তিতে মুসলিমদের সংরক্ষণের সুবিধা দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন। যদিও ইতিহাস বলছে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ১৯৯৪ সালে জনতা দলের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার আমলে। কংগ্রেসের অভিযোগ, ভোটের ঠিক আগে এ নিয়ে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে বিভাজনের রাজনীতি করে ফায়দা নেওয়ার কৌশল নিয়েছে বিজেপি। কংগ্রেসের প্রশ্ন, সিদ্ধান্ত বাতিল আগে কেন করা হল না?