শিশুদের জন্য সমাজমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
ছোটদের জন্য সমাজমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার আর্জি জানিয়ে মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। শুক্রবার সেই মামলা শোনা হল না। আদালত জানিয়েছে, এটি নীতিগত বিষয়। তাই এতে আদালত এখনই হস্তক্ষেপ করতে চায় না। মামলাকারীকে এ বিষয়ে আইন আনার জন্য সংসদে আবেদন জানানোর পরামর্শ দিয়েছে বিচারপতি বিআর গবই এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহ্র বেঞ্চ। এর জন্য প্রয়োজনীয় স্বাধীনতা তাঁকে দেওয়া হয়েছে।
জ়েপ ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন সমাজমাধ্যমে শিশুদের জন্য নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। মামলাকারীর আইনজীবী আদালতে জানান, সমাজমাধ্যমের অত্যধিক ব্যবহার ছোটদের জন্য বিপদ ডেকে আনছে। এর ফলে শিশুদের শরীর এবং মনে প্রভাব পড়ছে। নানা মানসিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে অত্যন্ত কম বয়সে। ১৩ বছরের নীচে শিশুদের জন্য সমাজমাধ্যম ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হোক, আদালতে জানান মামলাকারীর আইনজীবী। এই নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির ব্যবহারের কথাও বলেন তিনি। তাঁর প্রস্তাব ছিল, শিশুদের সমাজমাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনে বায়োমেট্রিক পরীক্ষার আশ্রয় নিতে হবে।
মামলাটি শুক্রবার শুনানির জন্য উঠলে শীর্ষ আদালত তার নিষ্পত্তি করে দিয়েছে। আদালের বক্তব্য, ‘‘এটি নীতিগত বিষয় (পলিসি ম্যাটার)। আপনি সংসদকে বলুন আইন আনতে। আমরা এই আবেদনের নিষ্পত্তি করছি এবং মামলাকারীকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিনিধিত্বের স্বাধীনতা দিচ্ছি। যদি তিনি প্রতিনিধিত্ব করতে চান, তবে আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে করতে হবে।’’
শুধু ১৩ বছরের নীচে শিশুদের জন্য সমাজমাধ্যম নিষিদ্ধই নয়, ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের জন্য সমাজমাধ্যমে ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপের কথাও আবেদনে জানিয়েছিল মামলাকারী সংগঠন। শিশুসুরক্ষার এই নিয়মবিধি মেনে চলতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট সমাজমাধ্যম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আর্জিও জানানো হয়েছিল। মামলাকারীর আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘‘সমাজে একটা অভূতপূর্ব মানসিক স্বাস্থ্যসঙ্কট তৈরি হয়েছে। শিশুদের মধ্যে তা বেশি করে দেখা যাচ্ছে। শুধু বাবা-মা শিশুদের উপর নজর রাখলেই হবে না, এর জন্য কঠোর বিধিনিষেধ প্রয়োজন।’’ শিশু-কিশোরদের মধ্যে সমাজমাধ্যমের প্রভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা বেশি, সমীক্ষার তথ্য উল্লেখ করে আদালতে তা তুলে ধরেছেন মামলাকারীর আইনজীবী। আগামী দিনে ওই সংগঠন শিশুসুরক্ষার স্বার্থে কী পদক্ষেপ করে, সে দিকে নজর থাকবে।