ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্ট রাজধানী এলাকায় বায়ু মানের উন্নতির জন্য আরও কিছু দিন নানা ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ চালু রাখতে বলল আজ। আর তার কয়েক ঘণ্টা পরেই বাতাসে দূষণের মাত্রা খানিকটা নেমে এসেছে এই যুক্তি দিয়ে ২৯ তারিখ থেকে স্কুল-কলেজে ক্লাস চালু করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করল দিল্লির অরবিন্দ কেজরীবাল সরকার।
রাজধানীর সব সরকারি অফিসও খুলবে ওই দিন থেকে। দিল্লির আপ সরকারের পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই বুধবার এই কথা জানিয়েছেন। যানবাহনে থাকছে কিছু নিয়ন্ত্রণ। ২৭ তারিখ থেকে বিদ্যুৎ ও সিএনজি-তে চলা গাড়িই শুধু ঢুকতে পারবে দিল্লিতে। ছাড় পাবে অত্যাবশ্যক পণ্যবাহী গাড়ি। গাড়ির উপরে এই নিয়ন্ত্রণ আপাতত ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ মন্ত্রী রাই। অফিসে যাতায়াতের জন্য সরকারি কর্মীদের গণপরিবহণের উপর নির্ভর করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাজধানীতে সমস্ত নির্মাণকাজ নিষিদ্ধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
স্কুল-কলেজ খোলার এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে, সুপ্রিম কোর্ট আজ দিল্লির বাতাসের মান নিয়ে কেন্দ্রের কড়া সমালোচনা করে। শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, “এই কি দেশের রাজধানী! বিশ্বকে কী বার্তা দিচ্ছেন আপনারা?” প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার বিশেষ বেঞ্চে আজ দিল্লির বায়ু দূষণ নিয়ে জনস্বার্থ মামলার শুনানি হয়। বেঞ্চের বাকি দুই সদস্য হলেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি সূর্য কান্ত।
বেঞ্চের ক্ষোভ, “অবস্থা যখন খুবই খারাপ হয়ে পড়ে, একমাত্র তখনই অ্যাড হক ভিত্তিতে আপনারা ব্যবস্থা নেন। যদিও পরিসংখ্যানের মডেল বিচার করে, কী ঘটতে পারে, সেটা ভেবে আগাম পদক্ষেপ করাটা জরুরি। সেটা করলে এমন মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরিই হয় না।” সুপ্রিম কোর্টের মতে, সরকার হাওয়ায় গতিবিধির ভরসায় চলতে পারে না। বায়ু মানের উন্নতিতে ও ফসলের গোড়া পোড়ানো বন্ধে সরকারি কর্তারা কী করছেন, এ দিন জানতে চেয়েছে আদালত। সরকারের তরফে সলিসিটির জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, “তিন দিন পরে আমরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করব।”
বুধবার দিল্লি এলাকায় বায়ু মান সূচক (একিউআই) ছিল ২৮০, আগের দিনের তুলনায় যা কিছুটা ভাল। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটেছে দেখে গত সোমবার থেকেই রাজধানী এলাকায় ঘরবাড়ি নির্মাণ ও ভাঙার উপরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু দিল্লির বায়ু মান সূচকের আরও উন্নতির লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার এবং এনসিআর তথা জাতীয় রাজধানী এলাকার রাজ্যগুলিকে আরও কিছু দিন ‘কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট’-এর সতর্কতা ও প্রতিরোধমূলক সুপারিশগুলি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এই সুপারিশগুলির মধ্যে রয়েছে, এনসিআর ও আশপাশের এলাকায় কলকারখানা ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দূষণ, গাড়ি থেকে দূষণকারী গ্যাস নিঃসরণ ও ধুলো ওড়া নিয়ন্ত্রণ করা, ডিজেলচালিত জেনারেটার ব্যবহার বন্ধ রাখা, বাড়ি থেকে কাজ করার ব্যবস্থা আরও কিছু দিন চালু রাখা।