বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লির দৃশ্য। গত এক মাসের তুলনায় অনেকটাই উন্নত হয়েছে বাতাসের গুণমান। ছবি: পিটিআই।
দিল্লির বাতাসের গুণমান আগের থেকে উন্নত হওয়ার প্রবণতা দেখা গিয়েছে গত কয়েক দিনে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বৃহস্পতিবার দিল্লি এবং সংলগ্ন রাজধানী অঞ্চলে দূষণ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ (চতুর্থ স্তরের) নিয়ন্ত্রণবিধি শিথিল করার অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে গত ২ ডিসেম্বর দূষণ মামলার শুনানি হয় শীর্ষ আদালতে। সেই দিনও চতুর্থ স্তরের নিয়ন্ত্রণবিধি (জিআরএপি ৪) শিথিল করার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। তবে তাতে সম্মতি দেয়নি বিচারপতি এএস ওকা এবং বিচারপতি এজি মাসিহ্র বেঞ্চ। বিচারপতিরা জানিয়েছিলেন, বাতাসের গুণমান সূচক নিম্নমুখী হওয়ার প্রবণতা দেখা গেলে কড়াকড়ি শিথিল করার বিষয়ে বিবেচনা করা হবে।
শীতের মরসুম শুরু হতেই রাজধানী অঞ্চলে বাতাসের গুণমান খারাপ থেকে অতি খারাপ হতে শুরু করে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে দূষণ মোকাবিলায় নিয়ন্ত্রণবিধি জারি করতে হয় প্রশাসনকে। পরে সেই নিয়ন্ত্রণবিধিতে আরও কড়াকড়ি করা হয়। নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে যায়। কমে আসে যানবাহন চলাচল। এমনকি বাসের সংখ্যাও কমে আসে। স্কুল-কলেজগুলির পড়াশোনা অনলাইন মাধ্যমে শুরু করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, আদালতের অনুমতি ছাড়া দূষণ মোকাবিলায় নিয়ন্ত্রণবিধি শিথিল করা যাবে না। বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লিতে বাতাসের গুণমান ছিল ১৬১, যা ‘সামান্য খারাপ’ পর্যায়ে পড়ে।
সিপিসিবি তথ্য অনুযায়ী, বাতাসের গুণগত মানের সূচক যদি শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তা হলে তা ‘ভাল’ পর্যায়ের মধ্যে পড়ে। ৫১-১০০ সন্তোষজনক, ১০১-২০০ সামান্য খারাপ, ২০১-৩০০ খারাপ, ৩০১-৪০০ খুব খারাপ, ৪০১-৫০০ অতি ভয়ানক। গত এক মাসে দিল্লির বাতাস খারাপ থেকে অতি ভয়ানক পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। তবে গত কয়েক দিনে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার প্রবণতা দেখা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটি আদালতে জানান, ৩০ নভেম্বর থেকে রাজধানী অঞ্চলে বাতাসের গুণমানের গড় ৩০০-র নীচে রয়েছে।
এই অবস্থায় চতুর্থ স্তরের নিয়ন্ত্রণবিধি আপাতত শিথিল করার অনুমতি দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাব, বর্তমানে তৃতীয় স্তরের নিয়ন্ত্রণবিধির কিছু কিছু অংশ পালন করা হোক। বাতাসের গুণমানের আবার অবনতি হলে কড়াকড়ি ফিরিয়ে আনতে হবে বলেও জানিয়েছে আদালত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, যদি বাতাসের গুণমান আবার ৩৫০ অতিক্রম করে যায়, তবে আবশ্যিক ভাবে তৃতীয় স্তরের নিয়ন্ত্রণবিধি জারি করতে হবে। বাতাসের গুণমান আরও খারাপ হয়ে ৪০০ পার করে গেলে পুনরায় চালু করতে হবে চতুর্থ স্তরের নিয়ন্ত্রণবিধি।