হাজারিবাগ সদর হাসপাতালে বসেছে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি। —নিজস্ব চিত্র।
হাজারিবাগ যে তার কৃতী সন্তানটিকে ভোলেনি, তার প্রমাণ রাখল আজ।
দেশকে ১৯৭৮ সালে প্রথম নলজাতক শিশু ‘দুর্গা’ উপহার দিয়েছিলেন চিকিৎসক সুভাষ মুখোপাধ্যায়। স্বীকৃতির বদলে প্রাপ্তি হয় উপেক্ষা আর অপমান। হতাশায় ১৯৮১ সালে আত্মঘাতী হন তিনি। রমাপদ চৌধুরী তাঁর জীবন নিয়ে লেখেন ‘অভিমন্যু’। তপন সিন্হা ছবি বানান, এক ডক্টর কি মওত। আজ হাজারিবাগের সদর হাসপাতালে বসল তাঁর মূর্তি। ‘‘দেশের কৃতী সন্তানটির জন্মস্থানে তাঁর মূর্তি বসাতে পেরে হাজারিবাগ গর্বিত,’’ বললেন হাজারিবাগের ডিসি রবি শঙ্কর শুক্ল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুর্গা তথা কানুপ্রিয়ার বাবা প্রভাত আগরওয়াল। বললেন, “মেয়ের বয়স এখন ৪০। ডাক্তারসাহেব বলেছিলেন আপনি যদি রাজি থাকেন, তা হলে আমি এই পরীক্ষা করব। তবে বাচ্চা পুরোপুরি সুস্থ হবে কি না সেটা নিয়ে একটু সংশয়ে আছি। ডাক্তারসাহেব আজ বেঁচে থাকলে দেখতেন, আমার মেয়ে আর পাঁচ জনের মতোই পুরোপুরি সুস্থ। ডাক্তারসাহেবের প্রতি আমি যে কী ভাবে কৃতজ্ঞতা জানাব...!” ধরে আসে প্রভাতবাবুর গলা। কলকাতা থেকে এসেছিলেন সুনীত মুখোপাধ্যায়। নলজাতক নিয়ে যিনি এক সময়ে গবেষণা করেছেন সুভাষবাবুর সঙ্গে। নব্বই পেরনো চিকিৎসক সুনীতবাবু বলেন, “শুধু টেস্টটিউব বেবির ক্ষেত্রেই তিনি জনক নন, তাঁর গবেষণার বেশ কিছু বিষয় ছিল প্রথম।”
হাজারিবাগের ডিসি রবিশঙ্কর জানান, হাজারিবাগের বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন প্রথম এই মূর্তির বিষয়ে উদ্যোগী হয়। মূর্তিটি তৈরি করেছে এনটিপিসি হাজারিবাগের কোল মাইন প্রজেক্ট। এই প্রজেক্টের প্রজেক্ট ম্যানেজার পার্থ মজুমদার বলেন, “হাজারিবাগের ডিসি আমাদের এই মূর্তি তৈরি করার কথা বললে আমরা সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যাই। খরচ হয়েছে দেড় লক্ষ টাকার কিছু বেশি। সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের জন্মস্থানের বাঙালিরা যে তাঁকে ভোলেননি এই মূর্তিই তার প্রমাণ।”