অফিসে কাজ করছিলেন গুমলার কার্তিক ওরাঁও কলেজের অধ্যক্ষ, শশীভূষণ (৫৮)। তখন দুপুর একটা। হঠাত্ই ভোজালি নিয়ে সোজা অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকে পড়ল এক ছাত্র। অধ্যক্ষের গলায় মারল দু’টো কোপ। রক্তাক্ত অবস্থায় অধ্যক্ষ মাটিতে পড়ে গেলেন। সেখানেই মৃত্যু হল তাঁর।
কলেজ চলাকালীন নিজের অফিসে ছাত্রের হাতে অধ্যক্ষ খুনের এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গুমলার এসপি ভীমসেন টুটি বলেন, ‘‘অভিযুক্ত ছাত্র রাকেশ কুজুরকে (২০) গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু খুনের কারণ আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। ধৃত ছাত্রকে জেরা করা হচ্ছে।’’
অধ্যক্ষকে যখন ওই ছাত্রটি ভোজালির কোপ মারছে, তখন ঘরে আরও দু’জন শিক্ষক ছিলেন। তাঁরা ভয়ে ঘরের বাইরে গিয়ে চিৎকার করতে শুরু করেন। ভোজালির কোপ মেরে বিএ-পার্ট টু’র এই ছাত্রটি কিন্তু পালিয়ে যায়নি। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাকেশ ওই রক্তাক্ত ভোজালি নিয়ে সোজা চলে যায় হস্টেলে। হস্টেল থেকেই ভোজালি-সহ রাকেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শশীভূষণ ওই কলেজের অধ্যক্ষের পাশাপাশি ভূগোল বিভাগেরও প্রধান ছিলেন। তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে আছে। বাড়ি গুমলাতেই। তাঁর এক ভাইও গুমলার পাশে, ঘাগরার একটি কলেজে পড়ান। অধ্যক্ষ খুনের খবর ছড়িয়ে পড়তেই গুমলার রাস্তায় নেমে পড়েন কলেজ ছাত্ররা। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তাও কিছুক্ষণ অবরুদ্ধ থাকে।
পুলিশ জানিয়েছে, খুনের কথা রাকেশ স্বীকার করলেও বিভ্রান্ত করার জন্য খুনের কারণ হিসেবে নানা রকম বয়ান দিচ্ছে। কখনও বলছে, কিছুদিন আগে তাঁকে কলেজ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। সেই জন্য অধ্যক্ষকে সে খুন করেছে। কখনও বলছে, কয়েকজন ছাত্রের প্ররোচনায় সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ মনে করছে, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই এই খুন। গুমলার এই কলেজ রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। খবর শোনার পরেই গুমলায় রওনা দেন রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রমেশ পাণ্ডে-সহ বেশ কয়েক জন পদস্থ কর্তা।