সিকিমে বিমান নামাতে দিনেও চাই চড়া আলো

সিকিমে বিমানবন্দর এই প্রথম। গ্যাংটক থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে পাকিয়ং-এ পাহা়ড় কেটে বানানো হয়েছে এই বিমানবন্দর।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৮ ০৩:২৪
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

রানওয়ের কয়েক পা দূরেই পাহাড়। রানওয়েতে নামার মুখে পাইলটের দৃষ্টিপথের বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে সে। তাই দিনের বেলাতেও পাহাড়ের মাথায় জোরালো আলো লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন পাইলটেরা।

Advertisement

সিকিমে বিমানবন্দর এই প্রথম। গ্যাংটক থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে পাকিয়ং-এ পাহা়ড় কেটে বানানো হয়েছে এই বিমানবন্দর। বিমান পরিবহণের নিয়ম অনুযায়ী রানওয়ের মাঝখানে সেন্ট্রাল লাইনের ডান ও বাঁ পাশে ৭৫ মিটার করে খালি জমি রাখতে হবে। কোনও ধরনের প্রতিবন্ধকতা চলবে না।

পাকিয়ং-এর ১৭০০ মিটার লম্বা রানওয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে বিস্তৃত। রানওয়ের পূর্ব দিকে ৭৫ মিটার খালি জায়গা থাকলেও পশ্চিমে ৪০ মিটার পরেই খাড়া পাহাড়। প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধক। এখানেই নিয়মের গেরোয় আটকে গিয়েছে পাকিয়ং। তবে বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, রানওয়ের পশ্চিম প্রান্তের ওই পাহাড় কাটার কাজ এখনও চলছে। ওই বিমানবন্দরের দায়িত্বে থাকা রিজিওনাল এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর কে এল শর্মা জানান, দেশের বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)-এর প্রতিনিধিরা পাকিয়ং ঘুরে গিয়েছেন। কিছু বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরাও। সেগুলির সন্তোষজনক উত্তর পাঠানোর পরেই বিমানবন্দরের লাইসেন্স মিলবে।

Advertisement

অথচ আঞ্চলিক উড়ান পরিষেবার আওতায় কেন্দ্র পাকিয়ং থেকে কলকাতায় উড়ান চালানোর বরাত দিয়েছে স্পাইসজেটকে। ওই বিমানবন্দরে উড়ান চালাতে আগ্রহ দেখিয়েছে জুম এয়ারও। জট কাটিয়ে কী ভাবে তাড়াতাড়ি বিমানবন্দর চালু করা যায়, সেই চেষ্টাই চলছে। সম্প্রতি স্পাইসজেটের পাইলটেরা পাকিয়ংয়ের রানওয়ে পরিদর্শনের পরে জানান, রানওয়ের পশ্চিমে থাকা ওই পাহাড়ের মাথায় জোরালো আলো লাগাতে হবে। রানওয়ের দক্ষিণ-পূর্বের পাহাড়ের উপরেও লাগাতে হবে জোরালো আলো।

পাকিয়ংয়ে বিমান ওঠানামার জন্য আধুনিক যন্ত্র বসানোর জায়গা নেই। ফলে দিনের আলোয় কমপক্ষে পাঁচ কিলোমিটার উপর থেকে পাইলট রানওয়ে স্পষ্ট দেখতে পেলে তবেই নামতে পারবেন। কিন্তু পশ্চিম আকাশ দিয়ে এলে পাহাড়ের আড়ালে চলে যাবে রানওয়ে। সেখানে পাশাপাশি বেশ কয়েকটি পাহাড় রয়েছে, যারা দেখতে একই রকম। রানওয়েটা ঠিক কোন পাহাড়ের পায়ের কাছে রয়েছে, অত উপর থেকে সেটা বুঝে ওঠা মুশকিল হতে পারে। তাতে দিগ্‌ভ্রষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।

পাহাড়ের মাথায় জোরালো আলো লাগানোর প্রস্তাব সেই জন্যই। তবে বৃষ্টি বা সামান্য কুয়াশা হলে কিংবা মেঘে আকাশ ঢেকে গেলে ওই বিমানবন্দরে নামা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন পাইলটেরা। তাঁদের দাবি, বিমান নামতে আসার আগে থেকে রানওয়ে এবং তার অ্যাপ্রোচ আলোও জ্বালিয়ে রাখতে হবে। লাইসেন্স পাওয়ার পরে যাত্রী পরিষেবা চালু হওয়ার আগেই তাঁরা খালি বিমান নিয়ে কয়েক বার পাকিয়ংয়ে নামতে চান বলেও জানান পাইলটেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement