উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোাদী
বসপার পথেই হাঁটতে চলেছে বিজেপি। এ বার ‘স্ট্যাচু কালচার’-এর সমর্থক তারাও। উত্তরপ্রদেশের প্রতিটি দলীয় কার্যালয়ে খুব তাড়াতাড়িই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মূর্তি বসতে চলেছে। রাজ্যের এক নেতাই এই তথ্য সম্প্রতি প্রকাশ্যে এনেছেন।
গত মঙ্গলবারই ৪৬ বছরে পা দিয়েছেন যোগী। জন্মদিন উপলক্ষ্যে আদিত্যনাথকে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনশল প্রধানমন্ত্রী মোদীর একটি মূর্তি উপহার দেন। ফাইবারের তৈরি ছোট মূর্তিটি অত্যন্ত পছন্দ হয় যোগীর। ওই দিনই সন্ধেবেলা এবিভিপি নেতা ও তাঁর অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি অভিষেক কৌশিক স্বয়ং আদিত্যনাথেরই একটি মূর্তি উপহার দেন তাঁকে। সূ্ত্রের খবর, যোগী সেই উপহার পেয়ে খানিকটা অবাকও হন। কারণ ব্যক্তিগত ভাবে নিজের জন্মদিন পালন করেন না তিনি। তবে তাঁর অনুরাগীরা ৪৬ কিলো লাড্ডু বিতরণ করে, গেরুয়া কেক কেটে তাঁর জন্মদিন পালন করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে সে দিন বেশ কয়েক জন বিশিষ্ট নেতা-মন্ত্রীও এসেছিলেন তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও শুভেচ্ছা জানান যোগীকে। শুভেচ্ছা জানান রাজ্য বিজেপির সাধারণ সচিব বিজয় বাহাদুর পাঠক ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কয়েক জন বিশিষ্ট নেতা ও সাধুসন্তরা। রামমন্দির নির্মাণ নিয়ে উদ্যোগী হতে তাঁরা যোগীকে পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এই সব নেতা ও সাধুসন্তদের প্রত্যেকেরই নাকি মূর্তিগুলি বেশ পছন্দ হয়। চিত্রকূটের এক দলীয় কর্মী-ভাস্কর ১৬ ইঞ্চি লম্বা এই মূর্তি তৈরি করেছেন জেনে তাঁকে দিয়েই বাকি মূর্তি বানানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। মূর্তিগুলি টেবিল বা বইয়ের তাকে যাতে সহজেই রাখা যায়, তাই ছোট মাপেই তৈরি করতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: রাতেই গভর্নর কোঠিতে ভাগবত, কিন্তু প্রণবের মুখ দেখলেন না কোনও কংগ্রেস নেতা
লখনউয়ের এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশের ৭৫টি জেলার মধ্যে ৬২টি জেলায় বিজেপির দলীয় কার্যালয় তৈরি করা হয়েছে। আমরা চাই, প্রতিটি অফিসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের এই ফাইবারের মূর্তিগুলি স্থাপন করা হোক। কারণ জনগণের মনের মধ্যেই রয়েছেন তাঁরা। তাই আরও বেশি করে তাঁদের স্মারক থাকা জরুরি।’’
বিরোধীদের বক্তব্য, কৈরানা ও নূরপুরের উপনির্বাচনে হারের পরই মায়াবতীর মতো মূর্তি সংস্কৃতির পথে হাঁটছে যোগী প্রশাসন। বিজেপির বিভিন্ন কার্যালয়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও দীনদয়াল উপাধ্যায়ের ছবি রয়েছে। তবে মূর্তি খুব একটা চোখে পড়েনি। যদিও বসপা নেত্রী মায়াবতীর ক্ষেত্রে প্রয়াত নেতা কাঁসিরামের পাশে নিজের মূর্তি স্থাপনের বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। সরকারি অর্থের বিনিময়ে মূর্তি তৈরির অভিযোগ ওঠে ‘বহেনজি’-র বিরুদ্ধে। তবে বিজেপি নেতার সাফ যুক্তি, সরকারের অর্থে নয়, মোদী ও আদিত্যনাথের প্রতি একনিষ্ঠ ভালবাসা থেকে কর্মীরাই নিজের খরচে মূর্তি নির্মাণের ব্যয়ভার বহন করবেন।