ফাইল চিত্র
মণিপুরের মানবাধিকার কর্মীদের হুমকি-অপহরণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজ্য মানবাধিকার কমিশন রাজ্যের তথ্য-অধিকার কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাঁদের জন্য নিরাপদ স্থানের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিল। তথ্য-অধিকার কর্মী ওয়াহেংবাম জয়কুমার সিংহের অভিযোগের ভিত্তিতে মণিপুরের ডিজিপি ও বিশেষ স্বরাষ্ট্রসচিবকে মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, এনএসসিএন আইএম জঙ্গিদের হাত থেকে তথ্য-অধিকার কর্মীদের বাঁচানো পুলিশ ও সরকারের কর্তব্য। মানবাধিকার কর্মীদের উপরে নাগা জঙ্গিদের আক্রমণের তিনটি অভিযোগ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফ থেকে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
সেনাপতি জেলার চার মানবাধিকার কর্মী কে এনোচ, পি জনসন, এসপি বেঞ্জামিন ও পিআর আমোসে ২০২০ সালের মার্চে তথ্য-অধিকার আইনের অধীনে জেলার উন্নয়নের টাকা আইএম জঙ্গিদের হাতে যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন তথ্য চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন। তখন থেকেই নাগা জঙ্গিরা তাঁদের উপরে অত্যাচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। এনোচের অভিযোগ, তাঁকে অপহরণ করে আট দিন আটকে রেখে অকথ্য অত্যাচার চালানো হয়। পরে তাঁকে আবেদন প্রত্যাহারে বাধ্য করে জঙ্গিরা। প্রতিবাদে ৩১টি গ্রামের বাসিন্দারা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে এমন ৩১টি আরটিআই আবেদন জমা দেন। ফের এক আবেদনকারীকে অপহরণ ও অত্যাচার চালিয়ে সেই সব আবেদন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করে এনএসসিএন জঙ্গিরা।
মানবাধিকার কমিশনে এ নিয়ে অভিযোগ করা হয়। কমিশন ডিজিপিকে বলেছে, মণিপুর পুলিশ রিজ়ার্ভ বা কোনও সরকারি অতিথিশালায় তথ্য-অধিকার কর্মীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়ে ও খাবারের বন্দোবস্ত করে রাখতে হবে। কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে- তার রিপোর্ট দুই সপ্তাহের মধ্যে কমিশনে জমা দিতে হবে।
এনএসসিএন আইএম-এর সদর দফতর নাগাল্যান্ডের হেব্রনে হলেও তাদের শীর্ষ নেতা থুইংলেং মুইভা-সহ বহু নেতাই আদতে মণিপুরি টাংখুল জনগোষ্ঠীর মানুষ। তাই মণিপুরের পার্বত্য জেলাগুলিতে আইএমের দাপট চলে। মণিপুর সরকার ও আসাম রাইফেলস বারবার জানিয়েছে, আইএমের সংঘর্ষবিরতি শুধুই নাগাল্যান্ডের ভৌগোলিক সীমায় প্রযোজ্য কিন্তু জটিলতা এড়াতে মণিপুরেও আইএম জঙ্গিদের তেমন ঘাঁটায় না কেন্দ্র।
মানবাধিকার কমিশন মণিপুরের তথ্য-অধিকার কর্মীদের উপরে নাগা জঙ্গিদের অত্যাচারের এই ঘটনা নিয়ে উত্তর-পূর্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় যুগ্ম সচিব ও নাগা জঙ্গি সংগঠনগুলির সিজ়ফায়ার মনিটরিং সেলকেও নোটিস পাঠিয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব চেয়েছে।
আগামী কাল নাগা শান্তি আলোচনার নতুন মধ্যস্থতাকারী একে মিশ্র ডিমাপুরে এনএসসিএন আইএম নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।