ছবি: সংগৃহীত।
গেরুয়া বৃত্তে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক মুখ। নীচে লেখা, ‘ত্রিপুরা থ্যাঙ্কস পিএম মোদীজি’।
গত কাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টের কাছে ‘লাইটহাউস’ আবাসন প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। প্রায় একই সময় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সঠিক রূপায়ণের জন্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে সেরার স্বীকৃতি পায় ত্রিপুরা। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব ফেসবুকের প্রোফাইলে নিজের ছবি সরিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ওই ছবি লাগিয়েছেন।
আপাত ভাবে মনে করা যেতে পারে গত কালের প্রকল্প উদ্বোধন ও রাজ্যের স্বীকৃতিতে খুশি হয়ে এ কাজ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দলে যে ভাবে তাঁর উপরে সংস্কারপন্থীদের চাপ বাড়ছে, তাতে ছবি বদলের পিছনে অন্য কারণও দেখতে পাচ্ছেন রাজনীতির লোকজন। অনেকের মতে চাপের মুখে নিজের মুখ আড়াল করতে চাইছেন বিপ্লব। এমনকি একে খাস প্রধানমন্ত্রীর লোক বা তাঁর আশীর্বাদধন্য হিসেবে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা বলেও মনে করছেন অনেকে। বিপ্লব নিজে কোনও ব্যখ্যা দেননি এর।
রাজ্য প্রশাসনের এবং দলের সব ক্ষমতা বিপ্লবের হাতে থাকলেও বিজেপির কর্মসূচির রাশ অনেক সময় চলে যাচ্ছে সংস্কারপন্থীদের হাতে। যেমন, গত ১০ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সভাপতির জয়প্রকাশ নড্ডার কনভয়ে বামলার প্রতিবাদে দ্রুত বড়সড় প্রতিবাদ মিছিল করে শক্তি দেখিয়েছেন সংস্কারপন্থীরা। গত ৬ ডিসেম্বর ত্রিপুরার ভারপ্রাপ্ত নেতা বিনোদ সোনকরকে ঘিরে ‘বিপ্লব হটাও, বিজেপি বাঁচাও’ স্লোগান তুলেছিলেন বিজেপির কর্মীরা। যাতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিপ্লব জনসভা করে জনতার রায় নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। যদিও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সাফ বুঝিয়ে দেন, সংগঠনের সমস্যা সংগঠন দেখবে, তিনি যেন সরকার চালানোর কাজে মন দেন। সভা করে দলের সংস্কারপন্থীদের শক্তি দেখানোর রাস্তা বন্ধ হয় এতে। গত কাল সন্ধ্যায়ও দিল্লিতে গিয়ে সোনকরের সঙ্গে এক দফা কথা বলেছেন সংস্কারপন্থী বিধায়ক রামপ্রসাদ পাল। গতকালই সংস্কারপন্থী বিধায়ক সুশান্ত চৌধুরী বিজেপির আমন্ত্রিত সদস্যপদ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন।
রাজনীতির লোকজন বলতে শুরু করেছেন, বিপ্লব এবং সংস্কারপন্থীদের মধ্যে কার্যত গৃহযুদ্ধ চলছে।এবং সেই যুদ্ধে মোদীভক্তিকেই হয়তো ঢাল করতে চাইছেন বিপ্লব।