দেবেন্দ্র ফডণবীস ও সঞ্জয় রাউতের বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তুমুল জল্পনা।
গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের পর দীর্ঘদিনের জোট ভেঙেছিল। তার পর থেকে বিজেপি-শিবসেনা নেতাদের মধ্যে কার্যত মুখ দেখাদেখি বন্ধের পরিস্থিতি। মহারাষ্ট্রে সেই দুই দলের দুই শীর্ষ নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস ও সঞ্জয় রাউতের মুখোমুখি বৈঠক ঘিরে তুমুল রাজনৈতিক জল্পনা। শিবসেনা ফের বিজেপি তথা এনডিএ জোটে ফিরতে পারে বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। যদিও দু’জনের তরফেই দাবি, বৈঠক সম্পূর্ণ ‘অরাজনৈতিক’।
গত বছরের অক্টোবরে মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটের পর সরকার গঠন ঘিরে টানাপড়েনের জেরে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসে শিবসেনা। তার পর থেকে প্রায় সব ইস্যুতে ফডণবীস-রাউত বাগযুদ্ধ মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে পরিচিত দৃশ্য। সম্প্রতি সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত ও কঙ্গনা রানাউতের অফিস ভাঙচুর ঘিরে সেই বিবৃতির লড়াই সপ্তমে ওঠে। তার মধ্যেই শনিবার মুম্বইয়ের একটি পাঁচতারা হোটেলে বৈঠকে বসেছিলেন দু’জন। জোট ভাঙার প্রায় এক বছর পর এই প্রথম মুখোমুখি বৈঠক করলেন দুই নেতা। তার পর থেকেই নানা অঙ্ক-সমীকরণ খুঁজতে শুরু করেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
সঞ্জয় রাউত শিবসেনার মুখপাত্র এবং রাজ্যসভার সাংসদ। একই সঙ্গে তিনি শিবসেনার মুখপত্র মারাঠি দৈনিক ‘সামনা’র এডিটর-ইন-চিফ। সেই সংবাদপত্রে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফডণবীসের সাক্ষাৎকারের বিষয়ে কথা বলতেই এই বৈঠক বলে দাবি করেছেন রাউত। তিনি বলেন, ‘‘দেবেন্দ্র ফডণবীস আমাদের শত্রু নন। আমরা ওঁর সঙ্গে কাজ করেছি। সামনায় সাক্ষাৎকারের জন্যই ফডণবীসের সঙ্গে দেখা করেছি।’’
আরও পড়ুন: প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জসবন্ত সিংহ
তাঁদের দলনেতা তথা মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেও বিষয়টি জানেন বলে স্পষ্ট বলেছেন রাউত। রাজনৈতিক জল্পনা উড়িয়ে রাউতের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘ফডণবীসের সঙ্গে দেখা করা কি অপরাধ? উনি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। আমাদের মধ্যে আদর্শগত পার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু আমরা শত্রু নই।’’
আরও পড়ুন: কৃষকরাই আত্মনির্ভর ভারতের মেরুদণ্ড, বার্তা মোদীর
সামনার প্রধান সম্পাদক জানিয়েছেন, তিনি এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। ঘোষণা করেছেন, দেবেন্দ্র ফডণবীস, প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাক্ষাৎকারও নেবেন। রাজনৈতিক গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি-ও। দলের মহারাষ্ট্রের প্রধান মুখপাত্র কেশব উপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন, ‘‘রাউত ফডণবীসের সাক্ষাৎকার নিতে চেয়েছিলেন। কী ভাবে সেটা হবে, তা নিয়ে কথা বলতেই বৈঠকে বসেছিলেন দু’জন। ফডণবীস জানিয়েছেন, বিহার ভোটের প্রচার শেষে তিনি সাক্ষাৎকারের জন্য সময় দেবেন।’’
অন্য দিকে বিজেপির একটি সূত্রে খবর, ফডণবীস চান, তাঁর সাক্ষাৎকার কোনও সম্পাদনা ছাড়া ছাপতে হোক। সেই বিষয়েও দু’জনের মধ্যে কথোপকথন হয়েছে বলে ওই সূত্রে জানা গিয়েছে।