ফাইল চিত্র।
গত রবিবার বঙ্গ সফরে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দিল্লি ফিরেই আগামিকাল শুক্রবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছেন তিনি। কেন এই তলব, তা নিয়ে প্রশাসনিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। নবান্নের খবর, আসন্ন পুরভোট, নবান্নের
সঙ্গে রাজভবনের অম্লমধুর সম্পর্ক এবং রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে শাহের সঙ্গে ধনখড়ের কথা হতে পারে।
ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের সম্পর্ক গোড়ার দিন থেকেই খুব সহজ নয়। আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় প্রতিনিয়তই রাজ্য সরকারের সমালোচনায় সরব হন রাজ্যপাল। পাল্টা জবাব দেয় তৃণমূলও। পুরভোটের মুখে আইনশৃঙ্খলার অবনতির কথা তুলে তিনি নিজে রাজ্যে ‘অবাধ’ ভোট করাবেন বলে ধনখড় যে দাবি করেছেন, নবান্ন সেটাও ভাল চোখে দেখছে না। পাশাপাশি, রাজ্যের আমলা ও পুলিশ কর্তাদের ভূমিকা ‘সঠিক’ না-হলে তাঁদের চরম ফল ভুগতে হতে পারে বলে রাজ্যপালের ‘হুমকি’কেও আপত্তিকর বলে মনে করছে সরকারের শীর্ষমহল।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীকে কড়া চিঠি লিখে রাজ্যপাল সম্পর্কে নালিশও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী সেই চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠিয়ে দেন। জবাবি চিঠিতে রাজ্যপালের পাশেই দাঁড়ান শাহ। ঘটনাচক্রে তার পর মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে যান। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ।
সম্প্রতি ভুবনেশ্বরে পূর্বাঞ্চলীয় আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকে শাহের সঙ্গে মুখোমুখি দেখা হয় মমতার। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবান পট্টনায়কের বাসভবনে একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজন সারেন তাঁরা। সে সময় রাজ্যপালের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দু’-এক কথা হয়ে থাকতে পারে বলেও অনেকের ধারণা। রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, নর্থ ব্লকের তলব পেয়ে প্রস্তুতি নিয়েই ধনখড় দিল্লি যাচ্ছেন।
রবিবার কলকাতায় এসে পরের বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনার পরিকল্পনা নিয়ে রাজ্য বিজেপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে গিয়েছেন শাহ। তার পর বাংলার বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে একে একে বৈঠক করছেন খোদ নরেন্দ্র মোদী। বুধবারই তিনি রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
সূত্রের খবর, বাংলার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মোদীকে বিশদে জানান দিলীপবাবু। পুরভোটের প্রস্তুতি নিয়েও কথা হয়। পরে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যে ভোটের আগে তৃণমূল যে ফের সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করতে চাইছে, বিজেপি কর্মীদের মারধর করছে সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানিয়েছি।’’
এই প্রেক্ষাপটে ধনখড়কে দিল্লি ডেকে পাঠানো নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও কৌতূহল তৈরি হয়েছে। দিল্লি থেকে ফেরার পর রাজ্যপালের ভূমিকা দেখেই বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে বলে রাজনীতিকদের ধারণা।