সাংসদের ‘ঘরে’ অবাধ দোকানদারি, ব্যবসা গোটাতে হবে

সাংসদ আসেন-যান। তাতে মনসুর আলির কিছু আসে-যায় না। বছর-বছর ফুলেফেঁপে ওঠে তাঁর দশকর্মা ভাণ্ডার।এ বার সেই ব্যবসা গোটানোর পরোয়ানা এল খোদ সংসদ থেকে।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৭ ০৭:৪৫
Share:

এই জবরদখল হঠাতেই নির্দেশ জারি করল লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের দফতর।

সাংসদ আসেন-যান। তাতে মনসুর আলির কিছু আসে-যায় না। বছর-বছর ফুলেফেঁপে ওঠে তাঁর দশকর্মা ভাণ্ডার।

Advertisement

এ বার সেই ব্যবসা গোটানোর পরোয়ানা এল খোদ সংসদ থেকে।

লুটিয়েন দিল্লির বিঠলভাই পটেল হাউস। সাংসদদের জন্য দিল্লির নানা প্রান্তে বরাদ্দ সরকারি ঠিকানাগুলির একটি। এই কমপ্লেক্সের পাঁচিলের ও-পারে সাংসদদের পরিচারকদের জন্য সরকারি কোয়ার্টার্স। অথচ তার অনেকগুলিতেই কোনও পরিচারক থাকেন না। উল্টে কোনওটিতে চলছে মনসুর আলির মতো দশকর্মা ভাণ্ডার, কোনওটিতে সেলুন কিংবা গাড়ির ওয়ার্কশপ। ফিরোজ শাহ রোড বা নর্থ-সাউথ অ্যাভিনিউয়ের সাংসদ পাড়াতেও একই ছবি।

Advertisement


সাংসদদের পরিচারকদের জন্য সরকারি কোয়ার্টার্স।

এই জবরদখল হঠাতেই নির্দেশ জারি করল লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের দফতর। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সাংসদদের গ্যারাজ ও পরিচারকদের কোয়াটার্সের অপব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে লোকসভার হাউস কমিটির চেয়ারম্যানের কাছে। সাংসদদের নিশ্চিত করতে হবে যাতে ওই পরিসরের অপব্যবহার না হয়। এর পরেও যদি দখলদারেরা না সরেন, সে ক্ষেত্রে আইন নিজের পথে চলবে।

হাউস কমিটির চেয়ারম্যান, বিজেপির কর্নাটকের সাংসদ সুরেশ অঙ্গাড়ি আজ জানান, সাংসদদের একাংশই জানিয়েছেন, সাংসদদের প্রাপ্য পরিসর দখল করে কী ভাবে রমরমা ব্যবসা চলছে বছরের পর বছর। আরও মারাত্মক হল, কিছু কিছু ক্ষেত্রে মাসিক ২০-৩০ হাজার টাকায় গ্যারাজ ও আবাসন ভাড়া দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে!


সাংসদের গ্যারাজ ও পরিচারকের আবাসন

এর পরেই বিষয়টি স্পিকারের অফিসে জানানো হয়। মনে করা হচ্ছে, তদন্ত রিপোর্টেই বেরিয়ে আসবে, কে কে এই বেআইনি কাজে লিপ্ত। এমনকী সাংসদেরাও কেউ জড়িত কি না। ১৫ মে চেয়ারম্যানের দিল্লি আসার কথা। তার মধ্যে রিপোর্ট এসে গেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট সাংসদের গ্যারাজ ও পরিচারকের আবাসনের অনুমোদন বাতিল করা হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি এসেছে।

এমন ঘটনা যে এই প্রথম নজরে এল, তা নয়। ইউপিএ আমলেও এক বার বিষয়টি নিয়ে শোরগোল হয়েছিল। তখনও দেখা গিয়েছিল, সাংসদদের নাকের ডগায় কার্যত মৌরসি পাট্টা গেড়ে বসেছে বিউটি পার্লার থেকে অন্য দোকানপাট। সে বার বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে কড়া ব্যবস্থাই নিতে চাইছেন স্পিকার।

—নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement