সোমবার বিজেপি-তে যোগ দিলেন সপা-র সাংসদ নরেশ অগ্রবাল। নয়াদিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। ইনসেটে জয়া বচ্চন। ছবি: পিটিআই।
দল ছেড়েই নাম না করে অভিনেত্রী-সাংসদ জয়া বচ্চনের উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য করলেন সমাজবাদী পার্টির প্রাক্তন সদস্য নরেশ অগ্রবাল। রাজ্যসভার টিকিট না পেয়ে সোমবার দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন সপা-র ওই সাংসদ।
এ দিন নয়াদিল্লিতে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের উপস্থিতিতে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন নরেশ। ওই বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের ভূয়সী প্রশংসার পাশাপাশি সপা নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগরে দেন তিনি। বলেন, ‘‘ফিল্মে কাজ করেন এমন লোকেদের সঙ্গে আমার তুলনা করা হয়েছে... আমার বদলে ফিল্মে নাচ করেন এমন এক জনকে রাজ্যসভার টিকিট দেওয়া হয়েছে। এটা ভীষণ যন্ত্রণাদায়ক। আমার ছেলে নিতিনও বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে। রাজ্যসভায় ও বিজেপিকেই ভোট দেবে। আমার প্রতি ভরসা রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদী, অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’
গত নির্বাচনের পর উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় সমাজবাদী পার্টির ৪৭ জন বিধায়ক। সেই হিসাবে তারা মাত্র এক জনকেই রাজ্যসভায় পাঠাতে পারবে। এত দিন সংখ্যাটা দুই ছিল। তাই জয়া এবং নরেশকে রাজ্যসভায় পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সংখ্যাটা এক হয়ে যাওয়ায় গত শুক্রবার সমাজবাদী পার্টির হয়ে রাজ্যসভায় মনোনয়ন জমা দেন জয়া বচ্চন। মনোনয়ন না পাওয়ায় হতাশ নরেশ জয়া সম্পর্কে ওই মন্তব্য করেছেন এবং দল ছেড়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চাপের মুখে কৃষকদের সব দাবি মেনে নিল মহারাষ্ট্র সরকার
যদিও নরেশ জানিয়েছেন, শুধুমাত্র রাজ্যসভার টিকিট না দেওয়ার তিনি দল থেকে ইস্তফা দেননি। সমাজের জন্য কাজ করাই তাঁর উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, ‘‘যত দিন না কোনও জাতীয় দলের সদস্য হবেন, সমাজের জন্য কিছু করা সম্ভব হয় না, তাই বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী মোদী, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাজে আমি আপ্লুত হয়েছি। মুলায়ম সিংহ যাদব এবং রাম গোপালের প্রতিও আমার শ্রদ্ধা রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে দল কখনও কংগ্রেস তো কখনও বিএসপির সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে। দলের এমন পরিস্থিতি খুবই দুঃখজনক।’’
এর আগেও এক বার নরেশের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে একটি বৈঠকও করেন নরেশ। তার পর থেকেই জল্পনার সূত্রপাত। কিন্তু তখন দলের তরফে এই জল্পনা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়ে জানানো হয়, বিজেপি ভয় পাচ্ছে। তাই এ সব রটাচ্ছে।
তাঁর ৩০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বার বারই দল বদলেছেন নরেশ। ১৯৮০ সালে প্রথম কংগ্রেসের টিকিটে বিধায়ক হন তিনি। ১৯৮৯ সালে কংগ্রেস ছেড়ে অখিল ভারতীয় লোকতান্ত্রিক কংগ্রেস নামে আলাদা দল গঠন করেন। তার পর বিএসপিতে এবং পরে মুলায়ম সিংহের আমলে সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দেন। মুলায়মের আমলেই ২০০৩ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি উত্তরপ্রদেশের পর্যটনমন্ত্রী ছিলেন। ২০১০ সালে রাজ্যসভার সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১২ সালে ফের সমাজবাদী পার্টি তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠায়।
সপা নেতা আজম খানের বিরুদ্ধেও জয়াপ্রদাকে ‘নাচনেওয়ালি’ বলার অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি ‘পদ্মাবত’ ছবি দেখে অভিনেত্রী তথা উত্তরপ্রদেশের রামপুরের প্রাক্তন সাংসদ জয়াপ্রদা মন্তব্য করেন, ছবিতে খল চরিত্র আলাউদ্দিন খিলজি তাঁকে সমাজবাদী পার্টি (সপা) নেতা আজম খানকে মনে করিয়ে দিয়েছে। এর পরই আজম খান তাঁকে ‘নাচনেওয়ালি’ বলেছিলে।