সনিয়া গাঁধী।
জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে কেউ দলের অবস্থানের বিরুদ্ধে যাচ্ছেন। কেউ বা সরাসরি নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করছেন প্রকাশ্যে। দলে শৃঙ্খলা আনতে এ বারে হাল ধরলেন অন্তর্বর্তী সভাপতি
সনিয়া গাঁধী।
কংগ্রেস সূত্রের মতে, নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের বিজেপিকে কী করে মোকাবিলা করতে হবে, তা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সনিয়া। এক সপ্তাহের মধ্যে এই সংক্রান্ত একটি রূপরেখা তৈরি করতে বলা হয়েছে। যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাহুল গাঁধীর ঘনিষ্ঠ সচিন রাওকে।
ক’দিন আগেই জয়রাম রমেশের মতো নেতা বলেছিলেন, মোদীকে একতরফা খলনায়ক হিসেবে তুলে ধরা ঠিক হয়নি। তাঁর অনেক ভাল প্রকল্প মানুষের মনে দাগ কেটেছে। জয়রামের সমর্থনে এগিয়ে আসেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, শশী তারুরের মতো নেতারা। দিল্লির নেতা জয়রাম ও অভিষেকের বিরুদ্ধে দলের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ করা হয়নি। কিন্তু তারুরের মন্তব্যের বিরোধিতা করছেন তাঁর রাজ্য কেরলের কংগ্রেস নেতারা। কেরল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তাঁর ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছে। তা-ও এমন দিনে, যখন খোদ রাহুল গাঁধী রয়েছেন কেরলে ।
এআইসিসির মঞ্চ থেকে কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা তারুরের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের সমর্থন করে বলেন, ‘‘মত জানানোর অধিকার কেরল কংগ্রেসের রয়েছে। কংগ্রেস আদৌ প্রধানমন্ত্রীকে খলনায়ক করেনি। বরং মোদী, অমিত শাহই বারবার নেহরু সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। ইন্দিরা গাঁধী, রাজীব গাঁধী থেকে শুরু করে সনিয়া গাঁধী-রাহুল গাঁধীকে অপমান করেছেন।’’ শর্মার মন্তব্য, ‘‘বিরোধী নেতারাও যদি প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা শুরু করেন, তা হলে গণতন্ত্র শেষ হবে।’’
কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘বিজেপিতে দলের অবস্থানের বাইরে কারও মুখ খোলার তেমন সুযোগ থাকে না। কেউ কেউ দলছুট হয়ে কখনও সখনও বলে থাকেন অবশ্য। কিন্তু কংগ্রেসের অনেক পরিচিত মুখই নিজেদের ইচ্ছেমতো বক্তব্য পেশ করে থাকেন। এ সব কংগ্রেসে সম্ভব, কারণ আমরা বিজেপির মতো অগণতান্ত্রিক নই। কিন্তু খুব বেশি গণতন্ত্রও অনেক সময় বিপদ ডেকে আনে। ফলে রাশ টানা জরুরি।’’ ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ নিয়ে কংগ্রেসের অনেক নেতা লাগাতার মোদী সরকারের অবস্থানে সায় দিচ্ছেন। ওয়ার্কিং কমিটি দলের অবস্থান বেধে দেওয়া সত্ত্বেও। এই পরিস্থিতিতে চার দফায় কংগ্রেস নেতাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হবে। প্রথমে জাতীয় স্তরের নেতাদের, তার পর রাজ্য, জেলা ও ব্লক স্তরে ছড়ানো হবে। বিজেপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেপ্টেম্বরে দেশের ৩৭০টি জায়গায় ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ নিয়ে প্রচার করা হবে। যাতে দেশের বাকি প্রান্তের মানুষের মনে জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে একাত্মবোধ জাগানো যায়।