সনিয়া গাঁধী। ফাইল চিত্র।
কথা ভুলে যাবে। ছবি মনে থাকবে।
গত কালই বাবাকে সতর্ক করেছিলেন প্রণব-কন্যা। আজ আরএসএসের সদর দফতরে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বক্তৃতা নিয়ে কংগ্রেসের তেমন আপত্তি না-থাকতে পারে। কিন্তু রাহুল গাঁধী যখন আরএসএসের বিরুদ্ধে নিরন্তর আক্রমণ শানাচ্ছেন, তখন প্রণবের মোহন ভাগবতের আমন্ত্রণ গ্রহণ করা, দু’জনে একসঙ্গে সঙ্ঘের সদর দফতর ঘুরে দেখা, এবং সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলিরাম হেডগেওয়ারকে ‘ভারতমাতার মহান সন্তান’ বলায় ক্ষিপ্ত কংগ্রেস নেতৃত্ব। সনিয়া গাঁধীও এতটাই ক্ষুব্ধ, যে তাঁর নির্দেশে কাল থেকেই আহমেদ পটেল, আনন্দ শর্মার মতো নেতারা প্রণবের নাগপুর সফরের বিরোধিতায় নেমেছেন।
কংগ্রেস নেতারা বলছেন, প্রণবের বক্তৃতা কিছুটা মান রক্ষা করেছে। আর সে কারণেই বক্তৃতা শেষ হওয়া মাত্র রাতে তড়িঘড়ি সাংবাদিক সম্মেলন ডাকে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আরএসএসের সদর দফতরে দাঁড়িয়ে আরএসএসকেই সত্যের আয়না দেখিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকেও রাজধর্মের পাঠ পড়িয়েছেন। এ বারে সঙ্ঘ তাদের পথ বদলাবে কি না, মোহন ভাগবত তার জবাব দিন।’’
প্রণব কেন সঙ্ঘের আমন্ত্রণ স্বীকার করলেন, তা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরেও ধন্দ রয়েছে। অনেকে বিরোধী জোট বানচালের প্রচেষ্টা বলেও মনে করছেন। সঙ্ঘকে তোপ দেগে রাহুল যখন সংখ্যালঘু ভোটকে কাছে টানতে চাইছেন, সে সময়ে প্রণবের সফর তাতে জল ঢেলে দিতে পারে বলে অনেক কংগ্রেস নেতার আশঙ্কা। কেউ কেউ এর পিছনে বিশেষ শিল্পপতির হাত থাকার সম্ভাবনাও দেখছেন। সব মিলিয়ে ক্ষুব্ধ সনিয়া পটেলকে দিয়েই প্রথম বিরোধিতার সুর বেঁধে দেন। পটেল সাফ বলেন, ‘‘আপনার কাছে এটি প্রত্যাশিত নয়।’’
গত কালই শর্মিষ্ঠা প্রকাশ্যে বলেছেন, নাগপুরে গিয়ে প্রণব সঙ্ঘকে অপপ্রচারের সুযোগ করে দিলেন। প্রণব-পুত্র অভিজিৎ এ দিন এ নিয়ে জবাব এড়িয়ে যান। কিন্তু প্রণববাবুর পরিবারের ঘনিষ্ঠ অনেকেই বলছেন, প্রণব নাগপুরে যেতে পারলে অভিজিৎ কেন তৃণমূলে যাবেন না? তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা প্রণববাবুকে শ্রদ্ধা করি। তবুও বলব, তিনি নাগপুরে না গেলেই ভাল করতেন। কারণ, গাঁধীর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরএসএসের নাম জড়িত।’’