সীতারাম ইয়েচুরি, ডেরেক ও’ব্রায়েনদের সঙ্গে সনিয়া। ছবি: পিটিআই।
সদ্যই সংসদে পাশ হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। রাষ্ট্রপতির সম্মতি মেলার পর সেই বিলই এখন সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)। এ বার সেই আইন প্রত্যাহারের জন্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে আর্জি জানাল বিরোধী দলগুলি। মঙ্গলবার বিকেলে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে বিরোধী শিবিরের একটি প্রতিনিধি দল। সংশোধিত ওই আইনের বিরোধিতায় দেশের বিভিন্ন অংশ জ্বলছে, এখনই তা তুলে না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে প্রতিনিধি দলের তরফে রাষ্ট্রপতিকে জানানো হয়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে বলে রাষ্ট্রপতি তাঁদের আশ্বাস দিয়েছেন বলে পরে জানিয়েছেন সনিয়া।
রবিবার দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের পেটায় পুলিশ। তারই প্রতিবাদে সোমবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন বিরোধী দলের নেতারা। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা যে রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ জানাবেন, সেই সময় তা জানিয়ে দেওয়া হয়। এর পর এ দিন বিকেলে কংগ্রেস নেতা কবিল সিব্বল, একে অ্যান্টনি, গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা, তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআইয়ের ডি রাজা এবং আরজেডি নেতা মনোজকুমার ঝা-কে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন সনিয়া গাঁধী।
রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বেরিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন কংগ্রেস সভানেত্রী। সনিয়া এ দিন বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে দেশের পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর। উত্তর-পূর্ব থেকে তা দেশের বাকি অংশেও ছড়িয়ে পড়ছে। রাজধানী দিল্লিও বাদ যায়নি। তাই রাষ্ট্রপতিকে এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছি আমরা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জামিয়ার ঘটনাও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলেছি ওঁকে। সেখানে মেয়েদের হস্টেলে পুলিশ ঢুকে গিয়েছে। প্রতিবাদ সকলের গণতান্ত্রিক অধিকার। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিন্দনীয়।’’ জোর করে প্রতিবাদী মানুষের মুখ বন্ধ করা হচ্ছে, তাঁদের প্রতি মোদী সরকারের কোনও সহানুভূতি নেই বলেও অভিযোগ করেন সনিয়া।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেছি, অবিলম্বে যাতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন তুলে নিতে তিনি সরকারকে নির্দেশ দেন।’’
তবে, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিরোধীদের এই দেখা করার মধ্যেই দিল্লির রাস্তায় নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সীলামপুর এলাকায় ওই আইনের বিরুদ্ধে হাজার দুয়েক মানুষ জড়ো হন। বিক্ষোভ সামাল দিতে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ। তাতে দুই পুলিশকর্মী আহত হন বলে খবর। পুলিশের অভিযোগ, বিক্ষুব্ধ জনতাই প্রথম তাদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে। তাদের রুখতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। তাতে পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। উত্তেজিত জনতা একটি স্কুলবাসে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ।