সনিয়া গান্ধী (বাঁ দিকে) এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস তথা বিরোধী শিবির ভাল ফল করলে জাতীয় রাজনীতির মোড় ঘুরে যাবে বলে মনে করেন সনিয়া গান্ধী। কংগ্রেসের সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন সনিয়া বলেছেন, ‘‘আমার বিশ্বাস, লোকসভা নির্বাচনের ধারা বজায় রেখে ভাল করতে পারলে জাতীয় রাজনীতির ভোল পাল্টে যাবে।’’
একই সুর আজ শোনা গিয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের দাবি, তাঁর হিসেবে বড় জোর আর এক বছর কেন্দ্রের মোদীর সরকার টিকবে। অভিষেকের যুক্তি, ‘‘আগামী এক বছরের মধ্যে যে সব রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে, বিজেপি সর্বত্র ধুয়েমুছে যাবে। আর ২০২৬ সালের মধ্যে অসম বাদে বাকি সব রাজ্যে বিধানসভা ভোটে বিজেপির হার অনিবার্য।’’
বিরোধী শিবিরের দুই প্রধান দলের একই সুরে মন্তব্যকে রাজনৈতিক শিবির তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে। সনিয়া আজ কংগ্রেসের সাংসদদের সতর্ক করে বলেছেন, কোনও ভাবেই সন্তুষ্ট ও অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হলে চলবে না। লোকসভা নির্বাচনের ধারা বজায় রাখতে হবে। যে আবহ তৈরি হয়েছে, তা কংগ্রেসের পক্ষে। আসন্ন বিধানসভা ভোটে সকলকে এক হয়ে লড়তে হবে।
দিল্লিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় অভিষেক বলেছেন, ‘‘এক বার হারের ঢল নামতে শুরু করলে বিজেপি-বিরোধী হাওয়া তৈরি হবে। মানুষের মন এক বার তৈরি হয়ে গেলে তা বদলানো প্রায় অসম্ভব। তখন রাজ্যে রাজ্যে বিজেপির বহু বিধায়ক নৌকো ডুবে যাওয়ার আগাম আঁচ পেয়ে দল ছাড়বেন।” অভিষেকের ইঙ্গিত, লোকসভা নির্বাচনের পরে বাংলায় বিজেপির অনেকেই তৃণমূলের দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছেন। তাঁর কথায়, “যথাসময়ে এঁদের নাম জানতে পারবেন!” তাঁর মতে, যে দুই শরিক নীতীশ কুমার ও চন্দ্রবাবু নায়ডুর ভরসায় মোদী সরকার চলছে, তাঁদের কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।
কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, রাহুল গান্ধী রাষ্ট্রপতির ভাষণ ও বাজেট নিয়ে বিতর্কে লোকসভায় যে বক্তৃতা করেছেন, তার বার্তা গোটা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। কংগ্রেসের এক সাংসদ রাহুলকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে আরও বেশি করে হিন্দিতে বক্তৃতার পরামর্শ দিয়েছেন। রাহুল আজ দলের মহিলা সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়েছেন, দলের তরফে বলার জন্য মহিলাদের আরও বেশি করে সুযোগ দেওয়া হবে। সংগঠনকে চাঙ্গা করতে কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গ, তেলঙ্গানা, কর্নাটক, ওড়িশার মতো অন্তত সাতটি রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে দ্রুত রদবদল করবে। জনগণনার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়ার জন্য মোদী সরকারের সমালোচনা করেন সনিয়া। উত্তরপ্রদেশে কাঁওয়ার যাত্রার সময় হকারদের নাম প্রকাশের নির্দেশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের ফল থেকে শিক্ষা না নিয়ে মোদী সরকার বিভাজনের নীতি চালিয়ে যাচ্ছে।’’