Pulwama Attack

‘সন্তান হারানোর’ পুলওয়ামা নিয়ে বিরোধীদের তোপ প্রধানমন্ত্রীর

নরেন্দ্র মোদীর অভিযোগ, পুলওয়ামা হামলা নিয়ে বিরোধীরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির রাস্তা খুঁজছিলেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কেবড়িয়া শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২০ ১২:২৫
Share:

স্ট্যাচু অব ইউনিটির পাদদেশে প্রধানমন্ত্রী। ছবি: ভিডিয়ো গ্র্য়াব।

প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাফল্যের কথা তুলে ধরতে গিয়ে পুলওয়ামা হামলায় নিজেদের ভূমিকার কথা মেনে নিয়েছে পাকিস্তান। তা নিয়ে গতকাল থেকেই সরগরম দেশীয় রাজনীতি। এ বার বিরোধীদের নিশানা করে আক্রমণ শানালেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর দাবি, সন্তানহারা হয়ে শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছিল গোটা দেশ। কিন্তু কিছু মানুষ সেই শোকে শামিল ছিলেন না।

Advertisement

৩১ অক্টোবর সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মদিনটি রাষ্ট্রীয় একতা দিবস হিসেবে পালিত হয়। শনিবার সর্দার পটেলের ১৪৫তম জন্মবার্ষিকীতে গুজরাতে স্ট্যাচু অব ইউনিটির পাদদেশ থেকে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে পুলওয়ামা প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘আজ অফিসারদের কুচকাওয়াজ দেখে একটা দৃশ্য মনে পড়ে গেল, পুলওয়ামা হামলার দৃশ্য। সন্তানহারা হয়ে গোটা দেশ শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছিল। কিছু মানুষ সেই শোকে শামিল ছিলেন না। পুলওয়ামা হামলা নিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির রাস্তাই খুঁজছিলেন তাঁরা।’’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘গত কয়েক দিনে পড়শি দেশ থেকে যে খবর সামনে এসেছে, যে ভাবে দেশের সংসদে হামলার কথা মেনে নিয়েছে ওরা, যাঁরা এত দিন হামলার কথা অস্বীকার করছিলেন, এতে তাঁদের আসল চেহারা সামনে এসে গিয়েছে। রাজনৈতিক স্বার্থে মানুষ কতটা নীচে নামতে পারে, পুলওয়ামা হামলা-পরবর্তী রাজনীতিই তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: পুষ্টি পার্কের উদ্বোধন মোদীর, কটাক্ষ বিরোধীর​

লোকসভা নির্বাচনের আগে গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায় পাক মদতপুষ্ট এক জঙ্গি। তাতে ৪০ জন জওয়ান প্রাণ হারান। কড়া নিরাপত্তা বলয় পেরিয়ে কী ভাবে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি নিয়ে ওই জঙ্গি সিআরপি কনভয়ের কাছে পৌঁছে গেল, সেই সময় প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে পুলওয়ামা হামলা এবং তার পরবর্তী ভারতীয় বায়ুসেনার বালাকোট অভিযান নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট কুড়োনোর অভিযোগও ওঠে। এ বছর পুলওয়ামা হামলার বর্ষপূর্তিতে তা নিয়ে নতুন করে মোদী সরকাকে নিশানা করেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী। পুলওয়ামা হামলায় কাদের সবচেয়ে বেশি লাভ হয়েছে, প্রশ্ন তোলেন তিনি। হামলার তদন্ত নিয়েও কেন্দ্রকে একহাত নেন রাহুল।

কিন্তু গত বৃহস্পতিবার দেশের সংসদে দাঁড়িয়ে পাক মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধরী বলেন, ‘‘ঘরে ঢুকে ভারতের উপর আঘাত হেনেছি আমরা। ইমরান খানের নেতৃত্বেই পুলওয়ামায় সাফল্য এসেছে।’’ সেই নিয়ে শোরগোল শুরু হলে পরে যদিও সাফাই দিতে দেখা যায় পাক মন্ত্রীকে। তিনি জানান, ‘‘আমার মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আমি বলেছিলাম, পুলওয়ামার পর আমাদের বিমান ভারতের সেনা ছাউনিকে নিশানা করতে সফল হয়েছিল। নিরীহ মানুষদের মেরে সাহসিকতা প্রদর্শনে কোনও আগ্রহ নেই আমাদের। সন্ত্রাসী কাজকর্মের তীব্র বিরোধী আমরা।’’

আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহে রাজ্যে অমিত শাহ

কিন্তু ফাওয়াদ চৌধরী সাফাই দিলেও তত ক্ষণে তাঁর মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক চরমে পৌঁছেছে। তেতে উঠেছে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিও। পুলওয়ামা হামলা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় গোটা দেশের সামনে কংগ্রেসকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে বিজেপির তরফে দাবি ওঠে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নিশানা করে গেরুয়া শিবির। যদিও বিরোধীদের দাবি, জঙ্গি হামলা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেননি তাঁরা। নিরাপত্তা বলয় পেরিয়ে ওই জঙ্গি কী ভাবে সেখানে পৌঁছল, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন। নির্বাচনী প্রচারে পুলওয়ামাকে হাতিয়ার করে ভোট হাসিল করার বিরোধিতা করেছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement