এম নাগেশ্বর রাও।— ফাইল চিত্র।
সিবিআইয়ের অন্দরমহলের লড়াই ফের সুপ্রিম কোর্টে গড়াতে চলেছে। সিবিআই সূত্রে ইঙ্গিত, সংস্থার ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর এম নাগেশ্বর রাওয়ের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে একদল অফিসার মামলার কথা ভাবছেন।
অলোক বর্মাকে সরানোর পরেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিয়োগ কমিটি রাওকে ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগ করে। বর্মা নতুন করে দায়িত্ব নিয়ে যে সব বদলির নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা খারিজ করছেন রাও।
বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর পরে তাঁর আস্থাভাজন দুই ডিএসপি অশ্বিনী গুপ্ত এবং এ কে বস্সিকে দিল্লির বাইরে বদলি করে দিয়েছিলেন রাও। বর্মার নির্দেশে স্পেশ্যাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিলেন এই বস্সিই। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পুনর্বহাল হয়ে বস্সি ও গুপ্তকে ফিরিয়ে আনেন বর্মা। রাও ফিরে এসে সেই বদলি খারিজ করে দিয়েছেন। সিবিআইয়ের যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই বলা ছিল, বর্মা কোনও ‘বড়সড় নীতিগত সিদ্ধান্ত’ নিতে পারবেন না। ক্ষুব্ধ অফিসারদের অভিযোগ, ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা হিসেবে রাওকে নিয়োগের সময়েও বলা ছিল, তিনি কোনও ‘নীতিগত সিদ্ধান্ত’ নেবেন না। তা হলে রাও কী ভাবে ওই অফিসারদের বদলি করেছিলেন? সুপ্রিম কোর্টে সেই অভিযোগই জানানো হবে।
বদলি হওয়া অফিসারেরা যে সব পদক্ষেপ করেছিলেন, তা-ও ‘বাতিল’ বলে নির্দেশ জারি করেছেন নাগেশ্বর রাও। প্রশ্ন উঠেছিল, বর্মা কি পশ্চিমবঙ্গের একটি কয়লা খনি বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এক উচ্চপদস্থ কর্তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছিলেন? সেই কারণেই কি বর্মার দু’দিনের সব সিদ্ধান্ত বাতিল করা হল? আজ সিবিআই জানিয়েছে, এমন কিছুই হয়নি। কয়লা খনি বণ্টনের তদন্ত-রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে জমা করা হয়। সেই তদন্ত সংক্রান্ত কোনও পদক্ষেপ বাতিল করাও হচ্ছে না। কংগ্রেসের অভিযোগ, বর্মা রাফাল চুক্তি নিয়ে সিবিআই তদন্ত শুরু করতে পারেন বলে আশঙ্কা করছিল মোদী সরকার।
বর্মাকে সরিয়ে রাওকে সিবিআইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হলেও সিবিআইয়ের অন্দরমহলে এখন সন্দেহের আবহ। কে বর্মার লোক, কে নন, তা নিয়ে সবাই একে অপরকে সন্দেহের চোখে দেখছেন।