ফৌজদারি শাস্তির সুপারিশ তথ্য সুরক্ষা কমিটির  

আধারের মতো সরকারি উদ্যোগই হোক বা ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া— নানা ভাবে নাগরিকদের ব্যক্তিপরিসরের তথ্য বেহাত হওয়া ও তার অপব্যবহার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা ও দেশ জুড়ে তুমুল বিতর্কের মধ্যে গত অগস্টে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণের নেতৃত্বে এই কমিটি গড়েছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার।

Advertisement

নয়াদিল্লি

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৮ ০৪:৩৬
Share:

কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। -ফাইল চিত্র।

আশা করা হচ্ছিল জমা পড়বে গত মাসে। তথ্য সুরক্ষা নিয়ে বিচারপতি বি এন শ্রীকৃষ্ণ কমিটির রিপোর্ট অবশেষে জমা পড়ল কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের কাছে। আগামী দিনে ভারতে তথ্য সুরক্ষার চেহারা কেমন হওয়া উচিত, সে ব্যাপারে বিস্তারিত সুপারিশ রয়েছে এই রিপোর্টে। বিচারপতি বি এন শ্রীকৃষ্ণের কাছ থেকে আজ ২১৩ পাতার এই রিপোর্ট পাওয়ার পরে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি এবং আইন ও বিচার মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানান, এই রিপোর্ট সরকার খতিয়ে দেখবে, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বক্তব্য জানাবে এবং এ সবের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত তথ্য সুরক্ষা আইনের বিলের খসড়া মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে অনুমোদনের জন্য।

Advertisement

আধারের মতো সরকারি উদ্যোগই হোক বা ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া— নানা ভাবে নাগরিকদের ব্যক্তিপরিসরের তথ্য বেহাত হওয়া ও তার অপব্যবহার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা ও দেশ জুড়ে তুমুল বিতর্কের মধ্যে গত অগস্টে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণের নেতৃত্বে এই কমিটি গড়েছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। প্রায় এক বছরের মাথায় দীর্ঘ যে রিপোর্টটি এ দিন জমা পড়ল, তাতে প্রস্তাবিত তথ্য সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনকে ফৌজদারি অপরাধ গণ্য করে শাস্তিদানের সুপারিশ রয়েছে। এমন সুপারিশও রয়েছে যে, আইন চালু হওয়ার আগে কোনও অন্যায় কাজ হয়ে থাকলেও আইনটির (রেট্রোস্পেকটিভ) প্রয়োগ হবে। অবশ্যই ক্ষেত্রবিশেষে।

এই কমিটির দায়িত্ব পাওয়ার পরে বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণ জানিয়েছিলেন, তথ্য সুরক্ষা জ্বলন্ত সমস্যা। এর মূল তিনটি দিক দেখবে কমিটি। এক, নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষিত রাখা। দুই, সরকারের দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করা। তিন, এটা দেখা যে, তথ্য সুরক্ষার প্রয়োজন মেটাতে যেন শিল্প-বাণিজ্যের ক্ষতি করা না হয়। এই তিন দায়িত্ব পালনে কমিটি যে সব সুপারিশ করেছে, তাতে কোনগুলি সাধারণ ও কোনগুলি সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য, তা স্পষ্ট করে বলা আছে। গ্রাহকের অনুমতি দেওয়া, না-দেওয়া ও প্রত্যাহার নিয়ে সমস্যা, তথ্য দেশে না বিদেশে কোথায় জমা হচ্ছে, তা নিয়ে সংশয়, ও বিতর্ক সম্পর্কেও সুনির্দিষ্ট সুপারিশ রয়েছে এতে। কমিটির এ-ও সুপারিশ, আইনটির যথাযথ প্রয়োগ বা রূপায়ণ নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার তথ্য সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ (ডিপিএ) গড়বে।

Advertisement

এ দিনই বেঙ্গালুরুতে অ্যাসোচেম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘কম্পিটিশন কমিশন অব ইন্ডিয়া’-র উপদেষ্টা পায়েল মল্লিক আজ বলেন, ‘‘ভারতে তথ্য সুরক্ষার আইন যেমন উন্নত দেশগুলির আইনের হুবহু নকল (কপি-পেস্ট) না হয়। ভারতীয় প্রেক্ষাপটের কথা মাথায় রেখেই যেন তৈরি হয় আইনটি।’’

শ্রীকৃষ্ণ কমিটির সুপারিশ মেনে আইন হলে গুগল, ফেসবুক, টুইটারের মতো বড়ো, এমনকি ছোট সংস্থাগুলিরও তথ্য ব্যবহারের ধরন-ধারণে প্রভূত ছাপ পড়বে। ইতিমধ্যেই তথ্য সুরক্ষা নিয়ে মানুষকে ওয়াকিবহাল করতে ভিডিয়ো ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে গুগল। আর শেয়ারে ধস নামার পরে ফেসবুক জানিয়েছে, তাদের একার পক্ষে তথ্য সুরক্ষার সব দিক সামলানো সম্ভব নয়। সকলে মিলে এটা করতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement