কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ স্মৃতি ইরানির। ছবি: পিটিআই।
সোহরাবুদ্দিন শেখ এবং তুলসীরাম প্রজাপতি এনকাউন্টার মামলায় অমিত শাহকে ফাঁসাতে সিবিআইকে অপব্যবহার করেছে কংগ্রেস। মঙ্গলবার এমনটাই দাবি করলেন বিজেপি নেত্রী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি।
গত ২১ ডিসেম্বর ওই মামলায় অভিযুক্ত ২২ অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে মুম্বই আদালত। ওই মামলায় আগেই বেকসুর খালাস পেয়েছিলেন বিজেপি নেতা অমিত শাহ, রাজস্থানের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুলাবচাঁদ কাটারিয়া, গুজরাত পুলিশের তৎকালীন প্রধান পি সি পাণ্ডে। ডিসেম্বরের ওই রায়ের পর এ দিন একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন স্মৃতি। তাতে তিনি দাবি করেন, “সোহারাবুদ্দিন মামলায় অমিত শাহের বিরুদ্ধে তদন্তেতথ্যপ্রমাণবিকৃত করেছে সিবিআই। কিন্তু আদালত সমস্ত অভিযোগ থেকে অমিত শাহকে মুক্ত করেছে।” স্মৃতির আরও দাবি, “ওটা কংগ্রেসের ষড়যন্ত্র ছিল। ২০১০-এ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে ফাঁসাতেই সিবিআইয়ের অপব্যবহার করেছে কংগ্রেস। তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেস যে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, তার স্পষ্ট প্রমাণও রয়েছে।”
কংগ্রেসকে সরাসরি আক্রমণ করেই থেমে থাকেননি স্মৃতি। তাঁর সতর্কবার্তা, “দেশকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ক্ষমতা দখলের পথে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে কংগ্রেস তাঁকে ছেড়ে কথা বলত না।”
(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)
বিশেষ সিবিআই আদালতের রায় উল্লেখ করে স্মৃতির দাবি, “ওই রায়ে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে, আসল সত্য না খুঁজে রাজনৈতিক নেতাদের মামলায় জড়ানোর জন্য আগে থেকেই একটা তত্ত্ব খাড়া করে তা প্রমাণ করতে ব্যস্ত ছিল সিবিআই।”
আরও পড়ুন: মন্দির, গোরক্ষক তাণ্ডব, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, রাফাল: সবেতে খোলামেলা, সাক্ষাৎকারে এক অন্য মোদী
২০০৫-এর নভেম্বরে গুজরাত পুলিশের এনকাউন্টারে মারা গিয়েছিলেন সোহরাবুদ্দিন শেখ। গুজরাত পুলিশের দাবি ছিল, সোহরাবুদ্দিনের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন লস্কর-এ-তইবার যোগাযোগ ছিল। গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন সোহরাবুদ্দিন।
আরও পড়ুন: ভোটে জিততে মুখ চাই, কংগ্রেসের হারের সঙ্গে বিএনপির মহাবিপর্যয়ের তুলনা টানলেন হাসিনা
যদিও তদন্তের পর সিবিআইয়ের দাবি ছিল, হায়দরাবাদ থেকে মহারাষ্ট্রের সাংলি যাওয়ার পথে সোহরাবুদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী কওসর বাঈকে অপহরণ করে গুজরাত পুলিশ। চার দিন পর অমদাবাদে ভুয়ো এনকাউন্টারে সোহরাবুদ্দিনকে হত্যা করে গুজরাত পুলিশ। আরও দু’দিন পর নিখোঁজ কওসরকে ধর্ষণের পর খুন করা হয় গুজরাতের বনসকন্থা জেলায়। পরের বছর গুজরাত-রাজস্থান সীমানায় গুলি করে খুন করা হয় সোহরাবুদ্দিনের সহযোগী তুলসীরাম প্রজাপতিকেও।
ওই মামলায় গুজরাত পুলিশ পাল্টা দাবি করে, আদালতে শুনানির পর পুলিশি হেফাজতে থাকার সময় পালানোর চেষ্টা করছিলেন তুলসীরাম। তাঁকে থামানোর জন্যই গুলি ছোড়ে পুলিশ। তাতে মারা যান তুলসীরাম প্রজাপতি।
২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে ওই মামলা গুজরাত থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বইতে। গত ডিসেম্বরের রায়ে আদালত জানায়, সাক্ষীদের বয়ান এবং সিবিআইয়ের পেশ করা তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এই ঘটনাকে ‘ভুয়ো এনকাউন্টার’ বলা যায় না। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের অধিকাংশই ছিলেন গুজরাত এবং রাজস্থানের পুলিশ অফিসার। যে ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ছিলেন গুজরাত বিজেপি-র তৎকালীন নেতা তথা বিজেপির বর্তমান জাতীয় সভাপতি অমিত শাহ-ও।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)