হামলার পরে সুঞ্জওয়ান শিবিরে সেনা জওয়ানদের টহল। জম্মুতে। এপি
প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর জঙ্গি মুক্ত জম্মুর সুঞ্জওয়ান সেনা শিবির। জঙ্গি গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ জন জওয়ান। খতম করা হয়েছে চার জঙ্গিকেও। সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াইয়ের মাঝে পড়ে নিহত হয়েছেন এক সেনাকর্মীর বাবা। মৃত্যু হয়েছে ওই সেনাকর্মীরও। আহত বেশ কয়েক জন। জঙ্গি মুক্ত হলেও গোটা এলাকা ঘিরে রাখে জওয়ানরা। চলে তল্লাশি অভিযান। রবিবার সকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত। বৈঠক করেন সেনা আধিকারিকদের সঙ্গে।
জম্মু-দিল্লি জাতীয় সড়কের উপরে সেনাশহর সুঞ্জওয়ান। সেনা সূত্রে খবর, সেখানেই শনিবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ জইশের ‘আফজল গুরু স্কোয়াড’-এর জঙ্গিরা হামলা চালায়। শিবিরের পাশের নালা দিয়ে এসে পিছনের দিকের তার কেটে জঙ্গিরা ঘাঁটিতে ঢোকে বলে অনুমান সেনার। পিছনের ফটকের রক্ষীর সঙ্গে কিছু ক্ষণ গুলি বিনিময়ের পরে সেনাদের পরিবার ঘাঁটির যে অংশে থাকে সে দিকে গা ঢাকা দেয় জঙ্গিরা। শনিবার সংঘর্ষের প্রথমেই মদনলাল চৌধুরি ও আশরফ মির নামে দুই জওয়ান নিহত হন। দু’জনেই জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দা।
শনিবার তিন জঙ্গিকে খতম করা গেলেও আরও কয়েকজন জঙ্গি লুকিয়ে থাকার খবর ছিল সেনা বাহিনীর কাছে। ফলে জঙ্গি মুক্ত করার জন্য জারি থাকে তল্লাশি অভিযান। দফায় দফায় চলে গুলির লড়াই চলে। রবিবার সকাল পর্যন্ত চলে অভিযান। শেষ পর্যন্ত সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ সুঞ্জওয়ান সেনা শিবিরকে জঙ্গি মুক্ত বলে সেনা বাহিনীর তরফে জানানো হয়। উদ্ধার করা হয় বহু বিস্ফোরক।
জম্মুর সুঞ্জওয়ান সেনা শিবিরের বাইরে নিরাপত্তা রক্ষী ও সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা। রয়টার্স।
সেনা সূত্রে খবর, অভিযানের প্রথম থেকেই ঘাঁটির ভিতরে আটকে পড়া সেনাদের পরিবারের সদস্য এবং অন্য সাধারণ মানুষকে রক্ষা করাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। আর সে কারণেই অভিযান শেষ করতে অনেক সময় লাগল বলে প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়েছে। যদিও সাবধানতা সত্ত্বেও মহিলা ও শিশু-সহ দশ জন আহত হয়েছেন। নিহত হন এক জন।
আরও পড়ুন: ঘাঁটির সুরক্ষায় ১৪৮৭ কোটি
পাশে আছি। জঙ্গি হামলায় আহত এক জনকে দেখতে হাসপাতালে জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। পিটিআই।
আরও পড়ুন: প্রতিবেশীদের ক্ষেত্রে ডোভাল কি ডোবালেন
অভিযানের প্রথমে সেনা ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশনস গ্রুপ জঙ্গিদের ঘাঁটির এক অংশে কোণঠাসা করে ফেলে। পরে উধমপুর থেকে প্যারা কম্যান্ডোদের নিয়ে আসা হয়। জঙ্গিদের সঠিক অবস্থান জানতে বায়ুসেনার হেলিকপ্টার ও ড্রোনও ব্যবহার করে বাহিনী।
২০০৩ সালে জম্মুর সেনা এই ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলায় ১২ জন সেনা নিহত হয়েছিলেন। সাম্প্রতিক অতীতে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে কাশ্মীরের উরি সেক্টরে ভারতীয় জওয়ানদের তাঁবুতে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল আত্মঘাতী জইশ জঙ্গি। ১৮ জন ভারতীয় জওয়ান প্রাণ হারিয়েছিলেন। ভারতীয় সেনার পাল্টা গুলিতে ৪ জঙ্গিও খতম হয়।