সাক্ষাৎ: সঞ্জয় নিরুপমের সঙ্গে সীতারাম ইয়েচুরি। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের রাজনৈতিক সম্পর্ক কী হবে, তা নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। তারই মধ্যে মুম্বইয়ে কংগ্রেসের সদর দফতরে ‘অতিথি’ হিসেবে চা খেয়ে এলেন সীতারাম ইয়েচুরি।
তা-ও আবার এমন দিনে, যেদিন ‘লং মার্চ’ করে কৃষকদের দাবিদাওয়া আদায় করল মহারাষ্ট্রে সিপিএমের কৃষক সভা। এবং প্রমাণ করল, সিপিএম নিজের শক্তিতে আন্দোলন করতে পারে।
সোমবার বিকেলে ইয়েচুরির কংগ্রেস দফতরে যাওয়া ঘিরে দলের মধ্যে ফের প্রশ্ন—কী বার্তা দিতে চাইছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক? আজ সনিয়া গাঁধীর নৈশভোজেও সিপিএমের হয়ে মহম্মদ সেলিম এবং টি কে রঙ্গরাজন ছিলেন। যদিও তা নিছক সংসদীয় দলের নেতাদের বৈঠক হিসেবেই দেখছে সিপিএম নেতৃত্ব। তবে ইয়েচুরি কংগ্রেস দফতরে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে, মহারাষ্ট্রে কৃষকদের আন্দোলনের রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে কংগ্রেস ও অন্য দলের সঙ্গে নির্বাচনী জোটের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছেন তিনি? বিশেষত প্রকাশ কারাটেরা ত্রিপুরায় ভোটে বিপর্যয়ের পরেও যখন কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী জোটের ঘোর বিরোধী!
আরও পড়ুন: সনিয়ার নৈশভোজে একজোট বিরোধীরা
ইয়েচুরি নিজে এ বিষয়ে মুখ খোলেননি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের যুক্তি, মুম্বই কংগ্রেসের সদর দফতরে যাওয়া নেহাৎই সৌজন্যমূলক। মুম্বই কংগ্রেসের সভাপতি সঞ্জয় নিরুপম নিজে সোমবার আজাদ ময়দানে কৃষকদের সঙ্গে দেখা
করতে গিয়েছিলেন। ত্রিপুরা থেকে সোমবার মুম্বই গিয়ে পদযাত্রায় সামিল কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন সীতারাম। নিরুপম বলেন, ‘‘তারপর আমিই ইয়েচুরিকে ডেকে আমাদের অফিসে নিয়ে যাই। আমরাও কৃষকদের সমস্যা নিয়ে বহুদিন ধরে সরব। তা নিয়ে আমাদের কথা হয়।’’ মুম্বই নগর কংগ্রেসের সদর দফতর আর মহারাষ্ট্র প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির দফতর একই চত্বরে। ইয়েচুরি নিরুপমের অফিসে গিয়ে একসঙ্গে চা-ও খান।
তবে কংগ্রেস নেতাদের কৃষক-বান্ধব হওয়ার দাবি উড়িয়ে দিচ্ছেন ইয়েচুরির দলের কৃষক সভার নেতারা। কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা আজ বলেছেন, কংগ্রেস মোটেই কৃষকদের সমস্যা নিয়ে চিন্তিত নয়। আগামী সপ্তাহে কৃষক, পশুপালকদের উপর গোরক্ষকবাহিনীর হামলা নিয়ে সম্মেলন ডেকেছে কৃষক সভা ও অন্যান্য সংগঠন। হান্নান জানান, সেখানে তাঁরা কংগ্রেসের কাউকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন না।
সিপিএমের এই নেতারা মনে করছেন, মহারাষ্ট্রের কৃষক আন্দোলনের সাফল্যের ফায়দা তুলতে এখন কংগ্রেস, শিব সেনা মাঠে নেমে পড়েছে। রাহুল গাঁধী বিবৃতিও দিয়েছেন। ইয়েচুরি-শিবিরের যুক্তি, সিপিএমের গণ সংগঠন বিজেপি বিরোধী হাওয়া তুলবে আর বাকি বিরোধীরা তার ফায়দা তুলে নিয়ে যাবে। তার থেকে অন্যান্য দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা বা জোট হলে ফায়দা তুলতে পারে সিপিএমও।