কংগ্রেসের প্রতিবাদ-মিছিলের পুরভাগেই রয়েছেন সিদ্দেক আহমেদ। মঙ্গলবার করিমগঞ্জে। — নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ করিমগঞ্জের বিধায়ক সিদ্দেক আহমদের নেতৃত্বে জেলাশাসকের হাতে স্মারকলিপি তুলে দিল করিমগঞ্জ জেলা কংগ্রেস। এবং এই ঘটনার মাধ্যমেই বরাকের কংগ্রেস রাজনীতিতে পুনর্বাসন হল সিদ্দেকের। কেন্দ্রীয় সরকার অসমের প্রতি বৈমাত্র-সুলভ আচরণ করছে—এই অভিযোগকে সামনে রেখে করিমগঞ্জের ইন্দিরা ভবন থেকে বেরোয় প্রতিবাদ মিছিল। গত কালই মিছিলের পর্যবেক্ষক হিসেবে জেলায় দায়িত্ব দেওয়া হয় সিদ্দেককে। সেই অনুযায়ী আজ মিছিলের পুরোভাগেই ছিলেন পুনর্বাসিত এই কংগ্রেস বিধায়ক।
জেলাশাসকের কার্যালয় চত্বরে আর পাঁচটি রাজনৈতিক দলের প্রবেশের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ থাকলেও রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেসিদের জন্য কিছুটা বাড়তি ছাড় ছিল। ফলে শতাধিক লোক জেলাশাসকের কার্যালয়ের প্রবেশ দ্বার ঘিরে ধরে। সমস্যায় পড়তে হয় আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকা, জেলাশাসক অফিসে বিভিন্ন কাজে আসা বহু সাধারণ মানুষকে। করিমগঞ্জের জেলাশাসক সঞ্জীব গোঁহাই বরুয়ার হাতে স্মারকপত্র তুলে দেওয়ার সময়ও তাঁর অফিসে ভিড় করে বহু কংগ্রেস কর্মী। উপস্থিত ছিলেন করিমগঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ ললিতমোহন শুক্লবৈদ্য, উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পরুকায়স্থ, জেলা কংগ্রেস সভাপতি সতু রায়। মিছিলের জমায়েতের উদ্দেশে তাঁরা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন।
অসমের প্রতি দিল্লির বিমাতৃসুলভ আচরণের প্রতিবাদ করে সিদ্দেক আহমেদ বলেন, বিজেপির কথার সঙ্গে কাজের কোনও মিল নেই। অসমের মাটি বাংলাদেশে হস্তান্তর করার নিয়ে ইউপিএ সরকারের আমলে বিজেপি চরম বিরোধিতা করেছিল। বর্তমানে কেন্দ্রে শাসন ক্ষমতায় রয়েছে সেই বিজেপি। আর তারাই এখন রাজ্যসভায় জমি হস্তান্তরের পক্ষে বিল পাশ করাচ্ছে। এ ছাড়াও সুবনসিরি জলবিদ্যুত প্রকল্প নিয়েও বিজেপির অবস্থান ১৮০ ডিগ্রি বদলে গিয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি ভাঁওতার রাজনীতি করছে।
মন্ত্রিসভা থেকে অপসারিত হওয়ার পর মঙ্গলবারই প্রথম দক্ষিণ করিমগঞ্জের বিধায়ক সিদ্দেক আহমেদকে দল কোনও দায়িত্ব দিল। সে প্রসঙ্গে সিদ্দেক বলেন, ‘‘মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণের ক্ষমতা শুধু মুখ্যমন্ত্রীরই আছে। এ ছাড়া সে সময়ে অসমের রাজনীতিতে গোষ্ঠী কোন্দল, বড়োল্যান্ড জাতি-সংঘর্ষ প্রভৃতি বিষয়ের ফলে একটা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করা হয়। তবে তারপর, গত লোকসভা ভোটে তিনি এআইইউডিএফ প্রার্থী রাধেশ্যাম বিশ্বাসের হয়ে কাজ করেছিলেন, এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এই কংগ্রেস নেতা। তাঁর বক্তব্য, প্রার্থী পদ নিয়ে কংগ্রেস দলের মধ্যে সংঘাত শুরু হলে, তিনি শিলচর আসনে কংগ্রেস প্রার্থী সুস্মিতা দেবের পক্ষে কাজ করেন। তবে বর্তমানে কংগ্রেস দল তাঁকে যে দায়িত্ব দেবে তাই তিনি যথাযথ ভাবে পালন করবেন বলে সিদ্দেক জানিয়ে দেন। বরাকে কংগ্রেস কী সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়েই তাঁকে পুনর্বাসন দিলয উত্তের সিদ্দেক আহমেদ তেমন সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেননি।