শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডে ইঙ্গিতপূর্ণ প্রশ্ন তুলছেন ফডণবীস। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
শ্রদ্ধা ওয়ালকর ২০২০ সালে প্রেমিক আফতাবের বিরুদ্ধে ভাসাইয়ের থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা সত্ত্বেও কেন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ? আঙুল উঠছে তৎকালীন মহারাষ্ট্রের উদ্ধব সরকার প্রশাসনের দিকে।
২০২০-তে করা শ্রদ্ধার অভিযোগের চিঠি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে, মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস জানান, সেই সময়ে পুলিশ কেন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি তা নিয়ে তদন্ত করা হবে। তিনি বলেন, “আমি চিঠিটি দেখেছি এবং এতে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তা খতিয়ে দেখতে হবে। আমি কাউকে দোষারোপ করতে চাই না তবে চিঠির বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে এমন ঘটনা ঘটে। এটা তদন্ত করা হবে। ব্যবস্থা নেওয়া হলে হয়তো তাকে বাঁচানো যেত।’’
যদিও এই বিষয়ে পুলিশের দাবি, ওয়ালকরের চিঠির উপর ভিত্তি করে একটি তদন্ত শুরু হলেও পরে শ্রদ্ধা নিজেই মামলা প্রত্যাহারের জন্য একটি লিখিত বিবৃতি দেন। তার পরই পুলিশের তরফে তদন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মীরা ভাইন্দার-ভাসাই ভিরার কমিশনারেটের ডিসিপি, সুহাস বাভাচে জানান যে, ওয়ালকর তার লিখিত বিবৃতিতে লিখেছিলেন ‘আমার এবং আফতাবের মধ্যে বিবাদ মিটে গিয়েছে।’
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বাভাচে বলেন, “এই বিষয়ে যা কিছু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার ছিল সে সময় পুলিশ নিয়েছিল। শ্রদ্ধার অভিযোগও খতিয়ে দেখা হয়েছে। তদন্ত শেষে অভিযোগকারী নিজেই লিখিত বক্তব্য দিয়েছিলেন যে তাঁদের মধ্যে ঝামেলা মিটে গিয়েছে। এর পরেই তদন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়।”
উল্লেখ্য, ২০২০-র নভেম্বর মাসে মহারাষ্ট্রের পুলিশের কাছে জমা দেওয়া চিঠিতে, ওয়ালকর জানিয়েছিলেন, আফতাব তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি, খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন শ্রদ্ধা। আর তার পরেও সেই সময় কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় তৎকালীন উদ্ধব সরকারের পুলিশের দিকে আঙুল উঠছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলিতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকা শ্রদ্ধাকে খুনের অভিযোগ রয়েছে প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, এর পর তিনি শ্রদ্ধার দেহ ৩৫ টুকরো করেন। সেই মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখতে কেনা হয়েছিল নতুন ফ্রিজও। পরে ১৮ দিন ধরে ছতরপুর ছিটমহলের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসার অভিযোগও রয়েছে আফতাবের বিরুদ্ধে।
শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে দিল্লি পুলিশ ১২ নভেম্বর শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করেছে। সেই নিয়েই চলছে তদন্ত। তদন্তে নেমে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। তার মধ্যেই মহারাষ্ট্র পুলিশের কাছে করা শ্রদ্ধার সেই অভিযোগপত্র নিয়ে নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। উঠছে অনেক প্রশ্নও।