অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালা এবং নিহত প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়ালকর। ফাইল চিত্র ।
শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে খুনের পর তাঁর হাতের সোনার আংটি অন্য এক বান্ধবীকে উপহার দিয়েছিলেন অভিযুক্ত প্রেমিক আফতাব! শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল দিল্লি পুলিশের হাতে। পুলিশ শ্রদ্ধার হাতের সেই আংটি ইতিমধ্যেই খুঁজে পেয়েছে।
দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, শ্রদ্ধা এই সোনার আংটিটি পরতেন। শ্রদ্ধাকে খুনের পর আফতাব ওই আংটি তাঁর হাত থেকে খুলে নিয়ে নিজের কাছে রেখে দেন। পরে আফতাব ওই আংটি নতুন বান্ধবীকে উপহার হিসাবে দিয়ে দেন। শ্রদ্ধাকে খুনের পর এই বান্ধবীকেই আফতাব তাঁর ফ্ল্যাটে নিয়ে এসেছিলেন বলে ওই পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, আফতাবের এই কাণ্ডের কথা শুনে অবাক হয়েছেন তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরাও।
আংটি উদ্ধার করে আফতাবের ওই বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, ওই যুবতী পুলিশকে জানান যে আফতাবের সঙ্গে দেখা করতে ফ্ল্যাটে যাওয়ার পর তাঁকে ওই আংটি উপহার দিয়েছিলেন আফতাব। পুলিশ এই আংটি শ্রদ্ধার বাবাকে দেখিয়েছিল। শ্রদ্ধার বাবা জানান, ওই আংটি তিনিই শ্রদ্ধার জন্মদিনে উপহার দিয়েছিলেন। আংটি দেখে শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ ওয়ালকর কান্নায় ভেঙে পড়েন বলেও পুলিশ সূত্রে খবর।
এই আংটিকে শ্রদ্ধা হত্যা মামলায় গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবেই বিবেচনা করছে পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে আংটি উপহার দেওয়া ওই বান্ধবীর বক্তব্যও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরা এ-ও মনে করছেন, শ্রদ্ধাকে খুন করার পর অভিযুক্ত আফতাব তাঁর মাথার চুল কেটে ফেলেন। সেই চুল ফেলে দিয়ে আসা হয় ছতরপুরের জঙ্গলে। সূত্রের খবর, শ্রদ্ধার কাটা চুল পুলিশ ইতিমধ্যেই উদ্ধার করেছে। ডিএনএ পরীক্ষার পর সেই চুলের সঙ্গে শ্রদ্ধার বাবার চুলের ডিএনএ মিলে গিয়েছে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। এর আগে খুঁজে পাওয়া হাড় এবং রক্তের ডিএনএ পরীক্ষার জন্যও পাঠানো হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ছ’মাস আগে ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলীতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকা শ্রদ্ধাকে খুনের অভিযোগ রয়েছে প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, শ্রদ্ধার দেহ ৩৫ টুকরো করে ছতরপুর ছিটমহলের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন আফতাব।
শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে দিল্লি পুলিশ ১২ নভেম্বর শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করে। চলছে তদন্ত। একাধিক প্রমাণও উঠে এসেছে পুলিশের হাতে।