শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে একাধিক প্রমাণ উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। ফাইল চিত্র ।
তিনি নাকি এখন কিছুই মনে করতে পারছেন না! তবে মনে পড়লে আস্তে আস্তে সব জানাবেন। আদালতে নাকি এমনটাই জানিয়েছেন শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। পাশাপাশি শ্রদ্ধার প্রেমিক আফতাব এ-ও জানিয়েছেন যে, তিনি খুন করতে চাননি। প্ররোচনা দেওয়ার কারণেই নাকি খুন করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। পুলিশ শীঘ্রই তাঁকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে নিয়ে যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন আফতাবের আইনজীবী এ কুমার। শীঘ্রই আফতাবের নার্কো পরীক্ষা করা হবে বলেও আফতাবের আইনজীবী জানিয়েছেন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন আফতাব। আদালতে পরিবারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চেয়েছিলেন অভিযুক্ত। আদালত তাঁকে সেই অনুমতি দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন আইনজীবী কুমার।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ দিল্লি হাই কোর্টে শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ড মামলার শুনানি শুরু হয়।
শুনানি চলাকালীন বিচারকের কাছে খুনের কথা স্বীকার করে আফতাব। তিনি বিচারককে বলেন, ‘‘মাথা গরম ছিল, তাই রাগের মাথায় খুন করে ফেলেছি।’’ শুনানি শেষে আফতাবকে চার দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তদন্তভার সিবিআই-এর কাছে যাক, এই নিয়ে আবেদন জানানো হলে তা-ও খারিজ করে দেয় দিল্লি আদালত। আপাতত পুলিশের উপরেই আস্থা রাখা উচিত বলেও বিচারপতি জানান। আদালতের তরফে জানানো হয়, অভিযুক্ত পুলিশকে এখনও পর্যন্ত সব সঠিক তথ্য দিয়েছেন। দিল্লি পুলিশের দাবি, তাদের তরফে তদন্তের প্রায় ৮০ শতাংশ সমাধান করা হয়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ছ’মাস আগে ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলীতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে খুনের অভিযোগ রয়েছে প্রেমিক আফতাবের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, এর পর তিনি শ্রদ্ধার দেহ ৩৫ টুকরো করেন। সেই মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখতে কেনা হয়েছিল নতুন ফ্রিজও। পরে ১৮ দিন ধরে ছতরপুর ছিটমহলের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসা হয়।
শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে দিল্লি পুলিশ শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করেছে। সেই নিয়েই চলছে তদন্ত। তদন্তে নেমে একাধিক প্রমাণ উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। একটি ধারালো করাতও খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। মনে করা হচ্ছে এই করাত দিয়েই শ্রদ্ধার দেহ টুকরো টুকরো করে ফেলেন অভিযুক্ত আফতাব। খুঁজে পাওয়া গিয়েছে মাথার খুলির কিছু অংশ-সহ একাধিক হাড়ের টুকরো। সেই হাড়ের টুকরোগুলি শ্রদ্ধারই কি না জানতে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।