জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া (বাঁ দিকে) ও দ্বিগ্বিজয় সিংহ। —ফাইল চিত্র
মঙ্গলবার বলেছিলেন, দলের কোনও ক্ষতি হবে না। বুধবার জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে তীব্র শ্লেষাত্মক আক্রমণ করলেন মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ। সিন্ধিয়া ‘অমিত শাহ বা নির্মলা সীতারামনকে টপকে যেতে পারেন’ বলে খোঁচা দিয়েছেন দিগ্বিজয়। একই সঙ্গে তাঁর তির্যক মন্তব্য, ‘মোদী শাহের অভিভাবকত্বে’ ভাল থাকুন। অন্য দিকে সিন্ধিয়ার ১৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে কংগ্রেস থেকে কী কী পেয়েছেন, তা নিয়ে আলাদা করে টুইট করেছে মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস।
জল্পনা ছিলই। মঙ্গলবার সকালে যখন কংগ্রেস ‘মিসেস গান্ধী’কে ইস্তফাপত্র দিয়েছিলেন, তখন কংগ্রেসের সঙ্গে যেমন বিচ্ছেদ পাকা হয়েছিল, তেমনই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার বিজেপিতে যোগদানও কার্যত ছিল সময়ের অপেক্ষা। একই সঙ্গে মধ্যপ্রদেশে কমল নাথের সরকারও তীব্র সঙ্কটের মুখে পড়ে যায়। প্রয়োজনীয় সংখ্যা না থাকায় এখন সরকার পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কিন্তু তবু দিগ্বিজয় সিংহ এবং কমল নাথ দু’জনেই মঙ্গলবার বলেছিলেন, সিন্ধিয়া দল ছাড়লেও সরকার টিকিয়ে রাখতে কোনও সমস্যা হবে না।
রাত পোহাতেই জ্যোতিরাদিত্যকে আক্রমণ শুরু করে দিল কংগ্রেস। এ দিন সকাল সাড়ে ছ’টায় পর পর টুইট করে সিন্ধিয়াকে কটাক্ষে বিঁধেছেন দিগ্বিজয়। তিনি লিখেছেন, ‘‘যখন দেশে একের পর এক ব্যাঙ্ক ধসে পড়ছে, টাকার দাম তলানিতে চলে যাচ্ছে, অর্থনীতি কাঁপছে এবং আমাদের সামাজিক বুনন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, তখন উনি (সিন্ধিয়া) মোদী-শাহ সরকারে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছেন।’’
আরও পড়ুন: পায়লটের বিদ্রোহ সময়ের অপেক্ষা, কংগ্রেস যেন ঘুরে দাঁড়াতেই চায় না
কার্যত ব্যক্তিগত আক্রমণের পর্যায়ে গিয়ে দিগ্বিজয়ের অন্য টুইট, ‘‘উনি অমিত শাহ, নির্মলা সীতারামনের পরিবর্ত হয়ে উঠতে পারেন। ওঁর প্রতিভার বিচার করলে ওঁদের (অমিত শাহ-নির্মলা সীতারামন) চেয়েও ভাল কাজ করতে পারবেন। মোদী-শাহের অভিভাবকত্বে উনি বেড়ে উঠুন। মহারাজ, আমাদের শুভেচ্ছা রইল।’’
আরও পড়ুন: হার্ভার্ডের অর্থনীতির স্নাতক, স্ট্যানফোর্ডের এমবিএ থেকে অন্যতম ধনী মন্ত্রী হন জ্যোতিরাদিত্য
মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের তরফে আবার পরোক্ষে ‘বিশ্বাসঘাতক’ প্রতিপন্ন করার চেষ্টা হয়েছে সিন্ধিয়াকে। কংগ্রেসে থেকে কী কী পেয়েছেন, বা কংগ্রেস তাঁকে কী কী দিয়েছে, সেই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘‘সিন্ধিয়ার ১৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে ১৭ বছর সাংসদ, দু’বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্য সচেতক, কংগ্রেসের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক, উত্তরপ্রদেশে দলের দায়িত্ব, কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য, ভোটপ্রচারের প্রধান, ৫০টিরও বেশি টিকিট, ৯ জন মন্ত্রী।’’ সরাসরি কিছু না বলা হলেও শেষে শুধু প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘‘এর পরেও মোদী-শাহের আশ্রয়ে?’’
অর্থাৎ মধ্যপ্রদেশ তথা দেশের রাজনীতিতে সিন্ধিয়াকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলেই কংগ্রেস প্রচার চালাবে বলে ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন দিগ্বিজয় সিংহ।