national

লোকসভা ও বিধানসভা ভোট কি একসঙ্গে, আম আদমির মত চাইল কেন্দ্র

ফি-বছর কোনও না কোনও ভোটের ধাক্কা এড়াতে একইসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন করানোর লক্ষ্যে আরও একধাপ এগোল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সাংসদ, বিধায়ক, আমলা, বিশেষজ্ঞ, আম নাগরিকের কাছে এই বিষয়ে মতামত চাওয়া হল সরকারি ওয়েবসাইটে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২১:৫১
Share:

ফি-বছর কোনও না কোনও ভোটের ধাক্কা এড়াতে একইসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন করানোর লক্ষ্যে আরও একধাপ এগোল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সাংসদ, বিধায়ক, আমলা, বিশেষজ্ঞ, আম নাগরিকের কাছে এই বিষয়ে মতামত চাওয়া হল সরকারি ওয়েবসাইটে।

Advertisement

একসময় বিজেপির প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী লাগাতার একসঙ্গে সব ভোট করানোর কথা বলতেন। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই এই বিতর্ক এগিয়ে যাওয়ার কথাই বলেছেন বার বার। সম্প্রতি দু’টি সাক্ষাৎকারেও এই প্রসঙ্গ তিনি উত্থাপন করেছেন। কিন্তু শিক্ষক দিবসে দিল্লির একটি বিদ্যালয়ে পড়াতে গিয়ে খোদ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় একসঙ্গে ভোট করানোর কথা বলার পর নড়েচড়ে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ বারে সরকারি ‘মাই গভ’ পোর্টালে এই নিয়ে সকলের মতামত চেয়ে বসলেন তিনি। ১৫ অক্টোবরের মধ্যে এই মতামত দেওয়া যাবে।

প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বলেছেন, ‘‘যখনই কোনও রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে দেখা হয়, তাঁরা সজোরে কিংবা চাপা গলায় একটি কথা বলেন। সব ভোট যেন পাঁচ বছর অন্তর একইসঙ্গে হয়। এ ব্যাপারে কিছু করুন মোদীজি। কিন্তু একা মোদী এই নিয়ে কিছু করতে পারে না। এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে এগিয়ে এসে সব দলের সঙ্গে বসে ঐকমত্য রচনা করতে হবে।’’ ক্ষমতায় আসার প্রথম বছরেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁর সচিব নির্বাচন কমিশনারকে ফোন করে এই বিষয়ে উদ্যোগী হতে বলেন। কমিশন একটি খসড়া তৈরিও করে দিয়েছিল। ১৯৯৯ সালে আইন কমিশনও একসঙ্গে ভোটের পক্ষে সওয়াল করে। সম্প্রতি সংসদের স্থায়ী কমিটিও বিষয়টি খতিয়ে দেখে।

Advertisement

আরও পড়ুন: পৃথক দল গড়লেন সিধু, কেজরীকে তীব্র আক্রমণ

একসঙ্গে ভোট হলে যেমন খরচ অনেক কমে যাবে, তেমনই আদর্শ আচরণবিধির ধাক্কায় আটকে থাকবে না জনমুখী প্রকল্পের রূপায়ণ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত লোকসভা ও বিধানসভার নির্বাচন একইসঙ্গে হয়েছে। কিন্তু তার পর আর তাল রাখা যায়নি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জানেন, এই বিষয়টি বাস্তবায়িত করতে একটি সামগ্রিক ঐকমত্য রচনা করা দরকার। কারণ, একসঙ্গে ভোট করতে হলে কোনও বিধানসভার মেয়াদ কমাতে হবে, কারও বাড়াতে হবে। লোকসভা ও বিধানসভার মেয়াদ ছ’বছর বেধে দিতে হবে। যদি তাই করা হয়, তা হলে হঠাৎ কোনও সাংসদ বা বিধায়কের মৃত্যু হলে বা পদ ছেড়ে দিলে কী হবে? শাসক দল বা জোট যদি মাঝপথে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে ফেলে, সে ক্ষেত্রেই বা কী হবে? এই বিষয়গুলি নিয়েই সকলের মতামত চাওয়া হয়েছে।

অনেক আঞ্চলিক দল মনে করে, বিধানসভার সঙ্গে লোকসভা হলে কেন্দ্রে শাসক দলের প্রভাব খাটবে। সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর যুক্তি, লোকসভার সময়েই ওড়িশা বিধানসভার নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু মানুষ আজ এত বেশি সচেতন যে, দুই নির্বাচনে দু’রকম রায় দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের বক্তব্য, পরের লোকসভা ২০১৯ সালে। সে বছরই ৯টি রাজ্যে বিধানসভা ভোট আছে। আবার সামনের বছরই আরও পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ২০১৮ সালে আরও ১৩ রাজ্যে ভোট। এক বার ঐকমত্য রচনা হলে সংসদে সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করতে হবে। কিন্তু সব থেকে বড় প্রশ্ন হল, এই উদ্যোগের পরেও কি রাজনৈতিক দলগুলি সম্মতি দেবে একসঙ্গে ভোট করানোর পক্ষে?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement