গুজরাতে বেহাল মোদীর তাস আবে-ই

কিন্তু মোদীর রাজ্যে ভোট যখন দোরগোড়ায়, তখন সেই উন্নয়নের ভূতকে দিয়েই এ বার ‘বিকাশপুরুষ’-কে ঘায়েল করতে চাইছে বিরোধীরা।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

আমদাবাদ শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:৫১
Share:

জুটিতে: শিনজো আবের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী। বুধবার আমদাবাদের সিদ্দি সইদ মসজিদে। পিটিআই

উন্নয়ন, উন্নয়ন আর উন্নয়ন। সভাসমিতি হোক কিংবা সরকারি মঞ্চ, অথবা সোশ্যাল মিডিয়ায় চলা যুদ্ধে গুজরাতকে নিয়ে এটাই ছিল নরেন্দ্র মোদীর প্রচার। অন্য রাজ্যের তুলনায় গুজরাত মডেলকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে মুহূর্ত সময় নষ্ট করতেন না মোদী, অমিত শাহেরা।

Advertisement

কিন্তু মোদীর রাজ্যে ভোট যখন দোরগোড়ায়, তখন সেই উন্নয়নের ভূতকে দিয়েই এ বার ‘বিকাশপুরুষ’-কে ঘায়েল করতে চাইছে বিরোধীরা। রাজ্যের ‘বিকাশ’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিরোধীদের হাতিয়ার এখন সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়াল। যেখানে কৌশলী প্রচারের মোদ্দা কথা— মোদী এত কাজ করেছেন যে উন্নয়নও পাগল হয়ে পড়েছে! রাজ্যে বন্ধ দোকান, বেকারি থেকে ভাঙাচোরা রাস্তা— সবই নাকি পাগল করা উন্নয়নের ফসল! ভাঙা রাস্তায় লরি উল্টে পড়েছে। নীচে কটাক্ষ— ‘উন্নয়ন’ শুয়ে পড়েছে। ট্রাকের পিছনে লেখা— সাবধান! উন্নয়ন ছুটছে। আর এ সব কথাই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে পোস্টার-ব্যানার হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে গোটা রাজ্যে। বিরোধীদের ঝাঁঝালো কটাক্ষে নাকানিচোবানি খাচ্ছেন মোদী।

ভোটের আগে এই হামলা সামলাতে বিজেপির ভরসা অবশ্য নরেন্দ্র মোদীই। রাজ্যের বিকাশে তিনি কতটা আন্তরিক, তা বোঝাতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে-কে আজ আমদাবাদে উড়িয়ে এনেছেন মোদী। দিল্লি নয়, কেবল আমদাবাদেই আবে-র সফরকে সীমাবদ্ধ রেখে প্রধানমন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছেন, দেশের দায়িত্ব পেলেও তাঁর অগ্রাধিকারের তালিকায় এখনও গুজরাতই সবার উপরে। খাদি কুর্তা-পরা জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে পাশে নিয়ে আমদাবাদের প্রায় আট কিলোমিটার রাস্তা খোলা জিপে ঘুরেছেন মোদী। রোড শোয়ের সময়ে রাস্তার ধারে ভিড় করেছিলেন মানুষ। আর মোদীর নির্দেশে উন্নয়নের বার্তা দিতে দেবীপক্ষের অপেক্ষা না করে কাল থেকেই কাজ শুরু হচ্ছে আমদাবাদ-মুম্বই বুলেট ট্রেনের।

Advertisement

তবে মোদী-অমিত শাহেরা যতই ঢাকঢোল পেটান না কেন, এ রাজ্যের অনেকেই মনে করছেন, ভোটের আগে প্রবল চাপের মধ্যে রয়েছে বিজেপি। উন্নয়ন নিয়ে কৌশলী আক্রমণে দিশাহারা বিজেপি নামতে বাধ্য হয়েছে প্রতিআক্রমণে। মাঠে নামানো হয়েছে অরুণ জেটলি, নির্মলা সীতারামনকে। সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেটলিকে। বিজেপি সূত্রের খবর, নিজের রাজ্যে অমিত শাহ অধিকাংশ স্থানীয় নেতারই অপছন্দ। সেই কারণেই মাঠে নেমেছেন জেটলি। তাতেও অবশ্য ভয় যাচ্ছে না শাহের। অমিত তাই কলকাতার সফরের আগে তড়িঘড়ি উড়ে আসেন আমদাবাদে। সোশ্যাল মিডিয়া ও যুব সমাজ সম্পর্কে একটি আলোচনা সভায় যোগ দেন তিনি। সরকার সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় নেতিবাচক প্রচার থেকে তরুণদের সাবধান করে দেন বিজেপি সভাপতি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement