গ্রামাঞ্চলে কোভিড টিকাকরণ। -ফাইল ছবি।
জুলাইয়ের শেষ থেকে অগস্টের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দেশের রাজ্যে রাজ্যে কোভিড টিকাকরণের গতি উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে গিয়েছে গ্রামাঞ্চলে। সেই তালিকার শীর্ষে থাকা ৫টি রাজ্যের ৪টিই গোবলয়ের। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, রাজস্থান ও গুজরাত। বাকি রাজ্যটি মধ্যপ্রদেশ। এর মধ্যে নেই বাংলার নাম।
কোভিড টিকাকরণ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের এই তথ্য সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ছবিটা কী রকম, জানতে চাওয়া হলে অবশ্য রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম ও স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেছেন, “এমন কোনও তথ্য আমাদের জানা নেই এখনও পর্যন্ত। রাজ্যের গ্রামাঞ্চলে কোভিড টিকাকরণের গতি কতটা বেড়েছে গত দু'সপ্তাহে, সে সংক্রান্ত প্রামাণ্য তথ্য আমাদের হাতে এখনও আসেনি।”
কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি প্রতিটি রাজ্যের গ্রামাঞ্চলে কোভিড টিকাকরণের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল।
গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
কোভিড টিকাকরণ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের যে তথ্য সংবাদ সংস্থা সামনে এনেছে, তা জানাচ্ছে, তালিকার শীর্ষে থাকা রাজ্য উত্তরপ্রদেশে মোট যে পরিমাণ টিকা দেওয়া হয়েছে গত ২৬ জুলাই থেকে ৮ অগস্ট পর্যন্ত, তার ৭৩ শতাংশই দেওয়া হয়েছে গ্রামাঞ্চলে। ৬৯.৬৯ লক্ষ। একই সময়ে রাজ্যে দেওয়া মোট টিকার ৬৯ শতাংশ (৪৬.৮৬ লক্ষ) দেওয়া হয়েছে মধ্যপ্রদেশে আর বিহারে দেওয়া হয়েছে ৭২ শতাংশ (৩৪.৮৬ লক্ষ)। রাজস্থান ও গুজরাতে যথাক্রমে মোট টিকার ৬৮ শতাংশ (২৯.৬৪ লক্ষ) এবং ৬২ শতাংশ (২৯.৫৭ লক্ষ) দেওয়া হয়েছে গ্রামাঞ্চলে।
যদিও এর আগে ১ মে থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত সময়সীমার মধ্যে দেশের মোট টিকার ৫৬ শতাংশ দেওয়া হয়েছিল উত্তরপ্রদেশে। আর মধ্যপ্রদেশ, বিহার, রাজস্থান ও গুজরাতে যথাক্রমে দেওয়া হয়েছিল মোট টিকার ৪৫, ৬৪, ৫৭ এবং ৪৮ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে গত ২৬ জুন সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়, মোট টিকার ৫১ শতাংশ দেশের গ্রামাঞ্চলে দেওয়া হয়েছে। ৫৪ দিনের সময়সীমার মধ্যে দেওয়া সেই টিকার সংখ্যা ছিল ৯ কোটি ৬১ লক্ষ। যার অর্থ, ওই সময় দেশের গ্রামাঞ্চলে গড়ে দিনে ১৭ লক্ষ ৮১ হাজার টিকা দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের যে তথ্য সংবাদ সংস্থা দিয়েছে, তা জানাচ্ছে, গত দু'সপ্তাহে গ্রামাঞ্চলে সেই টিকাকরণের গতি উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে গিয়েছে। ওই সময় রাজ্যগুলিতে দেওয়া মোট টিকার ৬৩ শতাংশ দেওয়া হয়েছে গ্রামাঞ্চলে। অর্থাৎ, দিনে গড়ে ২৯ লক্ষ ৬৬ হাজার টিকা দেওয়া হয়েছে গ্রামাঞ্চলে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, এর ফলে কোভিড টিকাকরণে শহর ও গ্রাামাঞ্চলের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার প্রবণতা তো দেখা গিয়েছেই, তার চেয়েও বড় কথা, দ্বিতীয় তরঙ্গে যে গ্রামাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তৃতীয় তরঙ্গের ভয়াবহতা ও কোভিডে মৃত্যুর আশঙ্কা থেকে সেই গ্রামাঞ্চলগুলিকে বার করে আনার সম্ভাবনাও জাগিয়েছে। এটাও প্রমাণ করেছে, টিকা নেওয়ার ব্যাপারে আমজনতার অনীহাও অনেকটা কমানো গিয়েছে। এটি খুব ভাল লক্ষণ।